পাচঁ মাসেও শেষ হয়নি জাবি’র নাটক ও নাট্যতত্ত্বের পরীক্ষা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের এক শিক্ষকের গড়িমসির কারণে দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দীর্ঘ পাঁচ মাসেও শেষ হয়নি। অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন ওই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজা মোহাম্মদ আরিফ।

খোঁঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘জাবি’র নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ২য় বর্ষের (৪৫তম ব্যাচ) ৫টা থিওরি আর ৫টা ব্যবহারিক কোর্স ছিল। এই কোর্সগুলোর পরীক্ষা শুরু হয় এবছরের ২৫ জুলাই। তারপর একে একে ৯টি কোর্সের পরীক্ষা গত ১৪ই অক্টোবর শেষ হয়। কিন্তু সহযোগী অধ্যাপক রেজা মোহাম্মদ আরিফের ২১০ নং কোর্সের (নাট্য প্রযোজনা-১) পরীক্ষা এখন অনুষ্ঠিত হয়নি। তিনি একের পর এক তারিখ ঘোষণা দিচ্ছেন, কিন্তু দুই দফায় পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করার পরেও তিনি পরীক্ষাটি নিতে পারেননি।

শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক রেজা মোহাম্মদ আরিফ তার এই কোর্সের পরীক্ষাটি প্রথমে ১১-১২ নভেম্বর নিবেন বলে জানান। কিন্তু এই সময়ে না নিয়ে পরবর্তীতে ২৩-২৪ নভেম্বর নেওয়ার কথা বলেন । তাতেও তিনি পরীক্ষা নিতে পারেননি এবং আবারও ২-৩ ডিসেম্বর পরীক্ষা নিবেন বলে জানিয়েছেন।

এমন অবস্থায় একটি কোর্সের পরীক্ষার জন্য ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ৩য় বর্ষের ক্লাস শুরু করতে পারছেন না। অথচ শিক্ষার্থীরা ১ম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ করেছিলেন ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে। দীর্ঘ প্রায় ১ বছর ৭ মাসেও দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করতে পারেননি বিভাগটি।

এসব বিষয়ে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। কিন্তু ভয়ে শিক্ষকদেরকে কিছু বলতে পারছেন না। এমনকি ভয়ে সাংবাদিকদের কাছেও মুখ খুলতে রাজি নন শিক্ষার্থীরা।

অন্যদিকে, ২য় বর্ষের (৪৫তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের ওয়েস্টার্ন একটি নাটকের প্রোডাকশনের রিহার্সাল করানোর কথা শিক্ষক রেজা মোহাম্মদ আরিফের। কিন্তু তিনি সেই দায়িত্ব পালন না করে বিভাগের অন্য শিক্ষক মহিবুর রউফ শৈবালকে রিহার্সালের দায়িত্ব দেন। অথচ তিনি শিক্ষার্থীদেরকে রিহার্সাল করানোর সময় না পেলেও ঠিকই তার নিজের থিয়েটার ‘আরশীনগর’ এবং ‘রহু চন্ডালের হাড়’ এর রিহার্সাল করাচ্ছেন বিভাগেরই ল্যাবে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে সহযোগী অধ্যাপক রেজা মোহাম্মদ আরিফ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তোমরা যা শুনেছো তা ঠিক নয়। আর পরীক্ষার কোন তারিখ ঘোষণা করা হয়নি এবং আমার প্রতি রিহার্সেল না করানোর যে অভিযোগ উঠেছে তাও সত্য নয়। আমরা ২-৩ তারিখের মধ্য পরীক্ষা শেষ করবো।’ এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের কোন অবহেলা নেই। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যতদ্রুত সম্ভব তাদের পরীক্ষা শেষ করবো। আমরা চাইনা তাদের পরীক্ষা আটকে থাকুক। আমি বিভাগীয় সভাপতির সাথে কথা বলেছি এবং আগামীকালের মধ্যে নোটিশ দেওয়ার চেষ্টা করবো। যে করেই হোক আগামী মাসের মধ্য আমরা পরীক্ষা শেষ করবো।’

রুদ্র আজাদ, জাবি প্রতিনিধি