‘ব্যক্তিগত ক্ষোভে’ শিক্ষার্থীকে শূন্য দিলেন জাবি অধ্যাপক!

‘ব্যক্তিগত ক্ষোভ’ থেকে এক শিক্ষার্থীকে ‘ক্লাসে উপস্থিতি ও টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার পরও শূন্য দেয়া’র অভিযোগ উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) গণিত বিভাগের অধ্যাপক জেসমীন আখতারের বিরুদ্ধে। এতে ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন।

ভূক্তভোগী মুক্তা বিশ্বাস জাবির গণিত বিভাগ ৪৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এছাড়া ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে গণিত বিভাগ ৪৩ ব্যাচের সব শিক্ষার্থীকে উপস্থিতির ক্ষেত্রে ও টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ নম্বর কমিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এমন অভিযোগ তুলে বিভাগীয় সভাপতি বরাবর উপস্থিতি ও অনুশীলন পরীক্ষার নম্বর পূনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছেন ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। গত ১৪ নভেম্বর গণিত বিভাগ ৪৩ ব্যাচের (২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ) স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়।

গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবি, স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ফ্লুইড মেকানিকস্ (৪০৯ নং কোর্স) কোর্সে শতভাগ উপস্থিতি থাকা সত্বেও কেউই উপস্থিতিতে (একটি কোর্সে ক্লাসে উপস্থিতিতে ১০ নম্বর) পূর্ণ নম্বর পাননি। যদিও বাকি কোর্সেগুলোতে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিতিতে পূর্ণ নম্বর পেয়েছেন। এছাড়া ভালো পরীক্ষা দিয়েও অন্যান্য কোর্সের তুলনায় এই কোর্সটিতে সব শিক্ষার্থী টিউটোরিয়ালে কম নম্বর পেয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি, কোর্স শিক্ষক অধ্যাপক জেসমীন আখতার ‘ব্যক্তিগত ক্ষোভ’ থেকে সবার নম্বর কমিয়ে দিয়েছেন। এমনকি মুক্তা বিশ্বাসের উপর ক্ষোভ থাকায় তিনি এ কারণে মুক্তা বিশ্বাসকে টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় ও ক্লাসে উপস্থিতিতে মোট ৩০ নম্বরের মধ্যে শূন্য দিয়েছেন। যে কারণে মুক্তা বিশ্বাস স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অন্যান্য কোর্সে কৃতকার্য হলেও ৪০৯ কোর্সটিতে অকৃতকার্য হয়েছেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক জেসমীন আখতারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার খাতায় মার্কস কম দেওয়াটা আমার ভুল ছিলো। আমি গত রবিবার সেটা সংশোধন করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকে পাঠিয়ে দিয়েছি। খুব তাড়াতাড়ি সংশোধন হয়ে যাবে।’

ব্যক্তিগত ক্ষোভের কারণে নাম্বার কম দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে সব শিক্ষার্থী সমান। তবে ওরা কেন এমন অভিযোগ করেছে জানিনা। ব্যক্তিগত কোন ক্ষোভের কারণে আমি নাম্বার কম দেয়নি।’

অধ্যাপক জেসমীন আখতার বলেন, চতুর্থ বর্ষে তার কোর্সের একটি ক্লাসে মুক্তা বিশ্বাস অন্যের হয়ে উপস্থিতি দেন। মুক্তা বিশ্বাস তার পূর্ব পরিচিত হওয়ায় তিনি তা হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তবে ওইদিন বারবার জিজ্ঞাসা করা সত্বেও মুক্তা বিশ্বাস নিজের পরিচয় গোপন করে যার উপস্থিতি দিয়ে দেন তার নামকে নিজের নাম বলে পরিচয় দেন। তিনি ক্লাসের অন্য শিক্ষার্থীদের কাছে তার নাম জিজ্ঞাসা করলে তারাও মুক্তা বিশ্বাসের প্রকৃত পরিচয় এড়িয়ে মিথ্যা পরিচয় দেন।

এ বিষয়ে গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. শরিফ উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

রুদ্র আজাদ, জাবি প্রতিনিধি