সোমবার পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি মুলতবি ঘোষণা

সোমবার পর্যন্ত আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠাতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি মুলতবি রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ বিষয়টি মুলতবি রাখেন।

শহিদুল আলমের স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন আজ হাইকোর্ট জমা পড়েছে। আর নিয়মানুযায়ী রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটিও আজ আপিল বিভাগে তোলা হয়। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘হাইকোর্টে আদেশের বিরুদ্ধে আবেদনটি করা হয়েছে।’ তখন শহিদুল আলমের পক্ষে আইনজীবী সারাহ হোসেন বলেন- ‘রিপোর্ট এসেছে।’ আদালত বলেন- ‘অপেক্ষা করুন।’ এরপর সোমবার পর্যন্ত বিষয়টি মুলতবি রাখেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন শুনানির অপেক্ষায় থাকার প্রেক্ষাপটে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বিষয়টি আজ শুনানির জন্য রয়েছে।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত শনি ও রোববার জিগাতলা এলাকায় সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার ফেসবুক লাইভে আসেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। সাম্প্রতিক এই ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারও দেন তিনি। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের মধ্যে উস্কানিমূলক মিথ্যা প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় ৬ আগস্ট শহিদুল আলমকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। ৫ আগস্ট রাতে ধানমন্ডির বাসা থেকে শহিদুল আলমকে তুলে নেয় ডিবি। তবে শহিদুল আলমকে আটকের পর নির্যাতন ও রিমান্ডে পাঠানোর বৈধতা নিয়ে এবং চিকিৎসার জন্য তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশনা চেয়ে তাঁর স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ ৭ আগস্ট একটি রিট করেন।

রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট এক আদেশে শহিদুল আলমের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে অবিলম্বে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে পাঠাতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তাঁর স্বাস্থ্যের বিষয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা গতকাল চেম্বার বিচারপতির আদালতে ওঠে। চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ না দিয়ে আবেদনটি বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।

গতকাল শহিদুল আলমকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নেওয়া হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাঁকে আবারও গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শহিদুল আলমের শারীরিক অবস্থা ভালো বলে হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড মত দিয়েছে। এরপরই তাঁকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়।