সাংবাদিকদের উপর হামলা
গতকাল শনিবার শিক্ষার্থী আন্দোলনের সপ্তম দিনে দায়িত্বরত সাংবাদিকদের উপর হামলা করা করা হয়। ছিনিয়ে নেয়া হয় তাদের ক্যামেরা, মুঠোফোন। আহত হন ৮-১০ জন সাংবাদিক।
গতকাল শিক্ষার্থী আন্দোলনের দায়িত্বরত সাংবাদিকদের উপর হামলা করা হয়। সেসময় সাংবাদিকদের কাছ থেকে হামলাকারীরা মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয় ও ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। তাদের মারধর করে। তাদের হামলায় কমপক্ষে ৮-১০ জন সাংবাদিক আহত হন।
অনলাইন পোর্টাল ‘ডেইলি মেইল ২৪’-এর সাংবাদিক তানভীর আহমেদ লাইভ দেয়ার সময় তার ক্যামেরা ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া হয়। সেসময় তাকে বেধড়ক মারধরও করা হয়। তার প্রেস আইডি দেখানোর পরও তাকে কাঠের একটি টুকরা দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। তার পায়ে এলোপাতারি ভাবে মারা হয়। এরপর তার প্রেস আইডি কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়। এরপর তাকে ধানমন্ডি মডেল থানায় আটকে রাখা হয়। পরে ঐ পোর্টালের সাংবাদিকদের অনুরোধে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
‘প্রথম আলো’র একজন প্রতিবেদকের ফোন কেড়ে নেন নীল রঙের টি-শার্ট ও হেলমেট পরা এক যুবক। ফোন ফেরত চাইলে আওয়ামী লীগ অফিস থেকে পরে সংগ্রহ করে নিতে বলেন। চাপাচাপির একপর্যায়ে তিনি ফোনটি ফেরত দেন।
এদিকে ‘দ্য ডেইলি স্টার’ সংবাদপত্রের তিন সাংবাদিককেও মারধর করা হয়। তাদের মধ্যে একজন সায়ের রিয়াজ। তিনি সংঘর্ষের ছবি তোলায় তার ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং তাকে মারধর করে ধানমন্ডি মডেল থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। তারপর সাংবাদিকদের অনুরোধে তাকে ছাড়া হয়। ‘দ্য ডেইলি স্টার’-এর আরেক সাংবাদিক সেলিম সাদমান সময়কেও সংঘর্ষের ছবি তোলায় থানায় আটক রাখা হয়। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে একজন জানান যে, ছাত্রলীগের কর্মীরা সায়েরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ‘দ্য ডেইলি স্টার’ সংবাদপত্রের ‘স্টার উইকেন্ড ম্যাগাজিনের’ সম্পাদক সুস্মিতা এস পৃধার উপরও হামলা করা হয় বলে জানা যায়। আন্দোলনের একটি ভিডিও করায় তার উপর ছাত্রলীগ কর্মীরা এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন তিনি। পরে ঐ ভিডিও মুছে ফেলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এছাড়া দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আরেকজন সাংবাদিক রফিকুল ইসলামকে পিটিয়ে আহত করা হয়। রফিউল ইসলাম বলেন, ঘটনার ভিডিও ক্লিপ পাওয়ার চেষ্টা করার জন্য দুই থেকে তিনজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন এবং কমপক্ষে ১০ জনকে হয়রান করা হয়েছে। তার প্রেস আইডি দেখানোর পরও তাকে কাঠের একটি টুকরা দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়।
‘চ্যানেল ২৪’-এর সাংবাদিক ফয়সাল হোসেন এবং ক্যামেরা ব্যক্তিত্ব কৃষ্ণ সরকার ক্ষমতাসীন দলীয় কার্যালয়ের নিকটবর্তী একই এলাকায় লাইভ দেখানোর সময় তাদের হাত থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে তাদেরও মারধর করা হয়।
এছাড়া ‘দৈনিক যুগান্তর’-এর এক সাংবাদিক সহ আরও বিভিন্ন চ্যানেল, সংবাদপত্র ও অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিক, ফটোগ্রাফার, ক্যামেরা ব্যক্তিত্বদের ক্যমেরা, ফোন ছিনিয়ে নেয়া সহ তাদের মারধর করা হয়।
তবে ছাত্র-যুবলীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ শিবিরকর্মী, জামাত, ছাত্রদল গতকাল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে মিশে যায়। তখন ছাত্র-যুবলীগ নেতাকর্মীরা তাদের কয়েকজনকে মারধর করার সময় বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও মারধরের শিকার হয়েছেন ।