যৌন হয়রানির অভিযোগে জাককানইবি’র শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের(জাককানইবি) নাট্যকলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং উক্ত বিভাগের দুই শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগে একই বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক রুহুল আমিনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

জানা যায় গত মঙ্গলবার (১৭জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীরের এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের কাছে এই অনুলিপি প্রদান করেন তাঁরা।

অভিযোগপত্রে নাট্যকলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ইসমত আরা ভূইয়া ইলা উল্লেখ করেন, রুহুল আমিনের দ্বারা আমরা যোগদানের পর থেকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভাবে হয়রানির স্বীকার হচ্ছি। তিনি আরো বলেন, গতকাল ১৭জুলাই ২০১৮ইং বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি মিটিং শেষে ওই অধ্যাপক অন্যান্য সহকর্মীদের সামনে বিভাগীয় প্রধানের  দিকে যৌন ইংগিতপূর্ন দৃষ্টিতে তাকায় এবং কুরুচিপূর্ন ইশারা করেছেন। কোনও সংশ্লিষ্টতা ছাড়া বিভাগের অন্যান্য শিক্ষিকাদের সম্পর্কে অমার্জিত, অশালীন ও অশ্রাব্য শব্দচয়নসহ বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা যৌন হয়রানিমূলক বাক্য উচ্চারণ করেন তিনি।

বিভাগের অন্য শিক্ষিকা সহকারী অধ্যাপক নীলা সাহা বলেন, বিভাগে যোগদানের পর থেকেই (রুহুল আমিন) একই আচরণ করে যাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, একদিন অফিস কর্মকর্তার রুমে তিনি(রুহুল আমিন) আমার চুলে এবং গালে হাত দেন।আমি সাথে সাথেই তার প্রতিবাদ করি।

বিভাগের আরেক শিক্ষিকা নুসরাত শারমিন বলেন, বিভাগে শাড়ি পড়ে আসলে অভিযুক্ত শিক্ষক নোংরা ভাবে তাকিয়ে থাকেন এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. মোহীত উল আলমকে মৌখিক ভাবে আমি এবং আমার সহকর্মী নীলা সাহা অভিযোগ করেছিলাম কিন্তু তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
উক্ত শিক্ষক (রুহুল আমিন) যে অশালীন শব্দ এবং বাক্য উচ্চারণ করেছেন তা একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের কাছে অগ্রহণযোগ্য ও অনাকাঙ্ক্ষিত।

মো: রুহুল আমিনের বহিষ্কার প্রসঙ্গে বলা হয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৬ এর ১১(১০) ধারা মোতাবেক ভিসির প্রদও ক্ষমতা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় পরবর্তী সিন্ডিকেট সভার অনুমোদন সাপেক্ষে আপনাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হল।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় আইন ৪৩(৬) ধারা মোতাবেক আপনি আইনি উপায়ে প্রতিকার চাইতে পারবেন।

উল্লেখ্য, একই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬ এর ধারা ১০(১১) এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে প্রক্টর ড.জাহিদুল কবীর কে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সহকারী প্রক্টর জনাব উজ্জ্বল কুমার প্রধান কে প্রক্টর( ভারপ্রাপ্ত)  হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়েছে।

অব্যাহতির বিষয়ে জানতে চাইলে ড. জাহিদুল কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন সিদ্ধান্তকে আমি সাধুবাদ জানাই। বিশবিদ্যালয়ের সন্মানার্থে যেকোন বিষয় আমি মাথা পেতে নেব।

অব্যাহতির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার( ভারপ্রাপ্ত)  কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর এর সাথে যোগাযোগ করা হলে, উনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

নাইমূল হাসান রাহাত, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি