বিদায় আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, ১২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি

বিদায় আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। আর স্পেনের হয়ে মাঠে নামবেন না তিনি। রবিবার টাইব্রেকারে রাশিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পরে এই সিদ্ধান্ত নেন ৩৪ বছরের তারকা, যাঁর গোলে ২০১০ বিশ্বকাপ জিতেছিল স্পেন। রবিবার রাতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘দেশের হয়ে এটাই ছিল আমার শেষ ম্যাচ। আর এটাই বাস্তব।’’

২০০৬-এ আন্তর্জাতিক ফুটবলে পা রাখার দু’বছর পরেই স্পেনের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। ২০১২-তেও ইউরো জয়ে তিনিই ছিলেন সব চেয়ে বড় ভরসা। ১২ বছরের বর্ণময় আন্তর্জাতিক ফুটবল জীবনে যবনিকা তিনি নিজেই নামালেন রবিবার, রাশিয়ার কাছে বিষাদময় হারের পরে।

গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে ইনিয়েস্তা শুরুর একাদশে ছিলেন না। ৬৫তম মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন। প্রাক্তন বার্সেলোনা তারকা এ দিন মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘অনেক সময় শেষটা স্বপ্নের মতো হয় না। আমার ক্ষেত্রেও তা হল। আজ আমার জীবনের সব চেয়ে দুঃখের দিন।’’ ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পরে বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল তাঁকে। সান্ত্বনা দিতে তাঁকে বুকে টেনে নেন আর এক হতাশ তারকা জেরার পিকে।

বিশ্বকাপের আগেই ইনিয়েস্তা বলেছিলেন, বিশ্বকাপের পরে ফুটবল জীবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সেই বিবৃতিতেই অবসরের ইঙ্গিত ছিল। তাই তাঁর এই সিদ্ধান্ত আকস্মিক নয়। ইনিয়েস্তার এই সিদ্ধান্ত শুনে স্পেনের কোচ ফের্নান্দো ইয়েরো বলেন, ‘‘আন্দ্রে আমাদের ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। ও একজন অসাধারণ পেশাদার। আজ রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে নামার পরে ওকে দেখে মনে হচ্ছিল দেশের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছে। ওকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ।’’

ইনিয়েস্তার অবসরের সিদ্ধান্তের খবর জানার পরেই রবিবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়ার ঝড় বয়ে যায়। প্রিয় স্প্যানিশ তারকাকে বিদায় জানিয়ে বেশির ভাগ ভক্তই অবশ্য তাঁর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। স্পেনের বিদায়ে মর্মাহত সমর্থকদের যন্ত্রণা এ দিন আরও বেড়ে যায় তাঁদের প্রিয় তারকার অবসরে।

কিছুদিন আগে ইনিয়েস্তা বার্সা থেকে বিদায় নিয়ে জাপানের একটি ক্লাবে যোগ দেন। বার্সার সঙ্গে ২২ বছরের ক্যারিয়ার ছিন্ন করার সময়ই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, এই বিশ্বকাপই জাতীয় দলের সঙ্গে তার শেষ সফর। কিংবদন্তি এই মিডফিল্ডার জাতীয় দলের হয়ে ১৩১টি ম্যাচ খেললেন।গোল আছে ১৩টি। ২০১০ সালের বিশ্বকাপ জিততে জয়সূচক গোলটি করেছিলেন তিনি।

দলের হারের কোনও অজুহাতও খাড়া করতে চাননি কোচ ইয়েরো। বলেন, ‘‘আমরা এখানে একটা লক্ষ্য নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু পারিনি। যাঁরা রাশিয়ায় এসেছিলেন আমাদের হয়ে গলা ফাটাতে, তাঁদের জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে। দলের ছেলেদের হতাশায় ভেঙে পড়া নিয়ে কী আর বলব? জয় ও হারের মধ্যে অনেক তফাৎ যে।’’