উত্তরায় ভুয়া রাইস কয়েন বিক্রির সংঘবদ্ধ চক্র গ্রেফতার

কিছুদিন পর পর সারাদেশে বিভিন্ন গণমাধ্যমে শোনা যায় রাইস কয়েনের ফাঁদে পড়ে টাকা খোয়ানোর সংবাদ। বেশ কিছুদিন ধরে এই কয়েন বিক্রি করার নাম করে প্রতারণা করে আসছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।গত শুক্রবার(২৯ জুলাই) দিবাগত রাতে রাজধানীর উত্তরায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, চক্রের প্রধান সৈয়দ মোস্তাকিন আলী (৩৫) এবং অন্যান্য গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছে – শাহে আলম পাঠান (৫০), মো. জাহিদ হাসান (৫৩), শওকত আলী  লিওন (৫৭), রাজু মিয়া (৫১) ও ফজর আলী (৪৫)।

সিআইডি সূত্রে জানা যায়, প্রতারক চক্রটি প্রতারণার ধরণটা বেশ ভিন্ন। প্রথমে একজনকে টাগের্ট করে। তারপরে বিভিন্ন কৌশলে টার্গেটকৃত ওই ব্যক্তির সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে চক্রের সদস্যরা।  একটা সময় ওই ব্যক্তির কাছে রাইস কয়েন(চাল কয়েন) নামের একটি কয়েনের গল্প বলা শুরু করে। এক পর্যায়ে বিশ্বস্ততা অর্জন করার পর লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় তারা।

প্রতারণার শিকার এক ব্যক্তির মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর থানায় দায়ের করা মামলা পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি অর্গানইজড ক্রাইমের একটি দল প্রতারক চক্রটিকে গ্রেফতার করেছেন।

সিআইডির সূত্রে আর জানা যায়, একটি কয়েন দেখিয়ে সেটিকে মহামূল্যবান দাবি করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া এই চক্রটির প্রধান উদ্দেশ্য।

প্রতারণার সময় তারা দাবি করে, এই কয়েনের মধ্যে ম্যাগনেটিক পাওয়ার সম্বলিত এবং যাতে ইউরেনিয়াম রয়েছে। এ ধরণের কয়েন নাসার বিজ্ঞানীরা মহাকাশ গবেষণার কাজে ব্যবহার করে থাকেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এ কয়েনটির বহু মূল্য রয়েছে।

আরও জানা যায়, বিশ্বাস অর্জনের জন্য কয়েনের চারপাশে কিছু চাল রেখে ম্যাজিক ট্রিকসও দেখাত চক্রটি। যেখানে চালগুলো চুম্বকের মতো কয়েনের সাথে আটকে থাকে। এমন ট্রিকস্‌ দেখে নিরিহ মানুষ সরল বিশ্বাসে কয়েনটির প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করে এবং প্রতারিত হয়।

এ ব্যাপারে সিআইডির সংঘবদ্ধ অপরাধ দলের প্রধান বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতারণার এ মামলার তদন্তকালে সিআইডি জানতে পারে, প্রতারক চক্রটি ২ কোটি টাকা হাতানোর টার্গেটে সংঘবদ্ধ হচ্ছে। আর তাদের ধরার জন্য সিআইডির সিনিয়র এ.এস.পি সাঈদের নেতৃত্বে জাল বিছিয়ে ফেলি আমরা। পরে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, সোর্সসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে সিআইডি তাদের মিটিং পয়েন্ট একেবারে রিয়েলটাইমে সনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে উক্ত ৬ আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৫ মার্চে সিআইডির অন্য এক বিশেষ অভিযানে  রাইস কয়েনের মাধ্যমে প্রতারণা করার অভিযোগে চার জনকে আটক করা হয়েছিল।