বাল্য বিবাহ বন্ধ করে পড়ালেখার দায়িত্ব নিলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক

ফরিদপুরে ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রী তুহিনা আক্তার (১৪) এর বাল্য বিবাহ বন্ধ করে তার পড়া লেখার দায়িত্ব নিলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া।

ফরিদপুরের শহরতলি কানাইপুর বাজরস্থ জাহাঙ্গীর টাওয়ারের কাজী অফিসে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তুহিনা’র বাবা জোর করে তাকে বিয়ে দেয়ার জন্য নিয়ে যায়। সে সময় কাজী মোঃ হুমায়ন কবির এর নিকট মেয়েটিকে ১৮ বছরের কম বয়স মনে হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় মেয়েটি স্বীকার করে যে তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার বাবা তাকে জোর করে বিয়ে দেয়ার জন্য এনেছেন। পরে কাজী ও উপস্থিত লোকজন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসককে এই বিষয়ে অবহিত করেন।

জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাইফুল হাসান এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মোঃ হাফিজুর রহমানকে ঘটনাস্থলে পাঠান। কানাইপুর বাজরস্থ জাহাঙ্গীর টাওয়ারের কাজী অফিসে উপস্থিত ছাত্রী তুহিনা আক্তার ও তার বাবা মাকে পাওয়া যায়। এ সময় তুহিনা আক্তার উপস্থিত ম্যাজিস্ট্রেটগণ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির সম্মুখে স্বীকার করে যে তাকে জোর করে বাল্য বিবাহ দেয়া হচ্ছিল।

তুহিনা আক্তার কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণীতে পড়াশুনা করে। তার বাবার নাম মোঃ সুরুজ মিয়া এবং মা’র নাম মোছাঃ সাহিদা বেগম। তাদের গ্রাম ভাটি কানাইপুর। ঘটনার বিবরণ শুনে এবং উপস্থিত বাবা-মা তাদের দোষ স্বীকার করলে মেয়েটিকে স্থানীয় প্যানেল চেয়ারম্যান, স্কুল শিক্ষক ও কাজীর জিম্মায় তার পরিবারের নিকট তুলে দেয়া হয়।

মেয়েটির বাল্য বিবাহের কারণ হিসেবে বাবা মা তাদের আর্থিক অনটন ও অসামর্থ্যরে বিষয় উল্লেখ করে।এসময় জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানান হলে,তিনি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেয়েটির পড়াশুনার ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব নেয়। এছাড়াও মেয়েটির পড়াশুনার বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখতে স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং স্কুল শিক্ষককে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এসময় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে মন্টু কুমার সরকার, মোঃ মজিবুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বাবা-মা, ও মেয়ের অঙ্গীকারনামা নেয়া হয়।

হারুন-অর-রশীদ,ফরিদপুর প্রতিনিধি