আইপিএল জুয়ায় ভাসছে ফরিদপুর, নিঃস্ব হচ্ছে হাজারো মানুষ!

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) শেষ হয়েছে কিছুদিন আগে এর পর শুরু হয়েছে ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট লীগ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল)। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই খেলাকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর জেলা জুড়ে বসছে জমজমাট জুয়ার আসর। এতে নিঃস্ব হচ্ছে হাজারো মানুষ। এরপরও এসব বিষয়ে না দেখার ভান করে নীরব রয়েছে প্রশাসন।

ফরিদপুরের স্বনামধন্য ক্লাব, শহরের বিভিন্ন মোঁড়, রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে পাঁড়ার চায়ের দোকান ও খেলার মাঠে সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয়ে যায় আইপিএল নিয়ে হৈ-হুঁল্লোড়, হট্টগোল এসবের পাঁশাপাশি বাজি ধরার নামে চলছে জুয়া।

মূলত, দুই বাংলাদেশী ক্রিকেট তারকা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান কলকাতা নাইট রাইডার্সে এবং কাটারমাস্টার নামে খ্যাত মোস্তাফিজুর রহমান সানরাইজার্স হায়দরাবাদে খেলার কারণে ভিনদেশী এই ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট লীগ নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই ফরিদপুরবাসীর মাঝে। আর তাই সাকিব, মুস্তাফিজ ম্যাচে খেলবে কিনা এ নিয়েও চলছে জুয়া। একইসাথে অন্যান্য দলগুলোর তুলনায় সাকিবের দল কলকাতা ও মুস্তাফিজের দল হায়দরাবাদের ম্যাচগুলোতে জুয়া হচ্ছে পাঁচ থেকে দশগুণ বেশি।

ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আইপিএলের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নির্বিঘেœ চলছে এই জুয়া খেলা। আর এই জুয়া খেলার ধরনটি হয় মূলত ওভার, ইনিংস বা ম্যাচভিত্তিক। প্রায় সব বয়সী ছেলে-যুবকেরা এই জুয়ায় অংশ নিচ্ছে।

স্থানীয় মামুন নামে একজন তরুণ বাজিকর জানান, ‘বর্তমান সময়ে খেলাধুলা মানেই বাজি ধরাধরি। বিপিএল, আইপিএল, ফুটবলসহ প্রায় সব ধরণের খেলায় সে বিভিন্ন জনের সাথে বাজি ধরে। কখনও টাকা আসে, কখন চলে যায়। এতে করে সে একটা অন্যরকম আনন্দ পায়।’

শুধু ফরিদপুর জেলা নয় রাজধানীসহ সারাদেশে অবলীলায় অংশ নিচ্ছে জুয়াড়িরা। যোগাযোগ হচ্ছে মোবাইল ফোনে, লেনদেন হচ্ছে বিকাশে। তবে পাড়ার অলিগলিতে স্ক্রিন লাগিয়ে ও টিভিতে টাকা হাতবদল হচ্ছে সরাসরিই। প্রতিটি ম্যাচের প্রত্যেক বলে চলছে এসব জুয়া। এখন আইপিএল জুয়াকেই পেশা হিসেবে নিয়েছে কেউ কেউ। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, চিকিৎসকসহ নানা পেশার মানুষও মেতেছে এসব জুয়া খেলায়। প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে ৩০ কোটি টাকারও বেশি। জুয়ার টাকা দিতে না পারায় ঘটছে আত্মহত্যার ঘটনাও। টাকার অভাবে কেউ কেউ দামি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, মোটরসাইকেল, স্ত্রীর সোনার গহনাসহ নানা দামি জিনিসপত্র বন্ধকও রাখছে। এর পরও এসব বিষয না দেখার ভান করে নীরব রয়েছে প্রশাসন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, সত্যিই এবিষয়টি আমাদের জন্য উদ্বিগ্নের এক কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রশাসন এব্যাপারে দ্রুত প্রদক্ষেপ নিবে।

হারুন-অর-রশীদ,১ ফরিদপুর প্রতিনিধি