বাংলাদেশসহ চার দেশে ভারতের এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা

জ্বালানি নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলতে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পেট্রোনেট এলএনজি লিমিটেড বাংলাদেশসহ মিয়ানমার, শ্রীলংকা ও মরিশাসে প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। পেট্রোনেট একই সঙ্গে মালদ্বীপেও এ ধরনের টার্মিনাল নির্মাণের সুযোগ খুঁজছে।

এই টার্মিনালগুলো বছরে ১৫ মিলিয়ন টন (এমটিপিএ) প্রাকৃতিক গ্যাসকে তরল অবস্থা থেকে গ্যাসে রূপান্তরিত করতে পারবে। এতে করে এই অঞ্চলে ভারতের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাব বাড়বে।

এই অঞ্চলের যে দেশগুলোকে নয়াদিল্লি নিজের প্রভাবাধীন এলাকা বিবেচনা করে আসছে, সেখানে চীনের প্রভাব বেড়ে যাওয়ার এই উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনার কথা ভাবছে ভারত।

পেট্রোনেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী প্রভাত সিং বলেন, ‘এ পর্যন্ত পেট্রোনেট মূলত দেশের ভেতরেই কাজ করে এসেছে। এখন বিশ্ববাজারে ছড়িয়ে পড়ার সময় এসেছে। আর প্রতিবেশীদের দিয়েই আমরা সেটি শুরু করতে চাই। দেশের বাইরে যে চারটি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, এর মধ্যে শ্রীলংকা এবং বাংলাদেশের প্রকল্প দুটি নিয়ে পরিকল্পনা কিছু এগিয়েও গেছে। ৭.৫ এমটিপিএ টার্মিনাল নিয়ে পেট্রোনেটের সঙ্গে বাংলাদেশের তেল, গ্যাস ও খনিজ কর্পোরেশনের (পেট্রোবাংলা) সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষর হয়েছে। অন্যদিকে শ্রীলংকা সরকারের সঙ্গে টার্মিনাল নিয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।’

মিয়ানমার সরকারের কাছেও এ ব্যাপারে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে মরিশাসে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য যেসব কোম্পানির তালিকা করা হয়েছে, সেখানে পেট্রোনেটের নামও রয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে, কাতারে গ্যাস অনুসন্ধান এবং এলএনজি প্রকল্প তৈরির ব্যাপারে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ওএনজিসি বিদেশ লিমিটেডের (ওভিএল) সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার পরিকল্পনার কথা জানায় পেট্রোনেট।

সিং আরও বলেন, ‘যেহেতু এটি গ্যাসের স্বর্ণযুগ চলছে, গ্যাস সরবরাহের যে ধারা এবং নিম্নমূল্যের কারণে এই খাত অন্তত আগামী দুই দশক রাজত্ব করবে। তাই এখন খুব ভালো একটা সময় যখন ব্যবসা সম্প্রসারণ করা যায় এবং এ সংক্রান্ত অবকাঠামো গড়ে তোলা যায়।’

ভুটান, নেপাল ও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ ছাড়াও ভুটান, নেপাল, বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের সঙ্গে এরই মধ্যে পাওয়ার গ্রিড লিংক স্থাপন করেছে ভারত। শ্রীলংকার সঙ্গে বিদ্যুৎ ট্রান্সমিশন লিংক স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের। এ ছাড়া গুজরাট ও রাজস্থানে যে বড় ধরনের সোলার পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে, সেখান থেকেও কমপক্ষে ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনতে চায় বাংলাদেশ।

এ ছাড়া সার্কের দেশগুলোর মধ্যে উপ-আঞ্চলিক হাইড্রোকার্বন অবকাঠামো যেমন গ্যাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য এনার্জি ইনিশিয়েটিভ গ্রহণের ক্ষেত্রেও এগিয়ে আছে ভারত। সার্কের মধ্যে ইলেকট্রিসিটি গ্রিড গড়ে তোলার অংশ হিসেবে এ অঞ্চলের বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর জন্য যেটার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।