ফরিদপুরে কিশোরীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করায় আটক ৪

ফরিদপুরে এক তরুণীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার অভিযোগে শাপলা মহিলা সংস্থা নামের এক এনজিও’র দুই কর্মী ও এক দালাল এবং রথখোলা যৌন পল্লীর এক নারী সর্দারকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে শহরের আদালতপাড়া থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। এ ব্যাপারে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

আটকরা হলেন শাপলা মহিলা সংস্থার কর্মী শহরের গোয়ালচাটের বাসিন্দা রীনা সাহা (৩৮) ও পূর্বগঙ্গবর্দী এলাকার রুবী আক্তার (৫০)। পতিতা পল্লীর নারী সর্দার তানিয়া বেগম (৪৩) ও দালাল গোয়ালচামটের ইউনুছ শেখ (৫৫)।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার এসআই আব্দুল গাফফার সাংবাদিকদের জানান, কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানার রুদ্রপুর গ্রামের নুরুল হকের মেয়ে লাকী আক্তার তারা বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে চট্টগ্রামে সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকার খোকা গার্মেন্ট কারখানায় কাজ নেন।

গত রবিবার অন্যদিনের মতো সকালের শিফটে কাজে যেতে ট্টগ্রামের সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকার ভাড়া বাড়ি থেকে বের হন লাকী। সকাল ৮টার দিকে কারখানার সামনে পৌঁছালে সেখানে এক ব্যক্তি পাশের একটি গার্মেন্ট কারখানায় বেশি বেতনে কর্মী নিয়োগের খবর দেন। ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে আলাপচারিতার একপর্যায়ে কোমল পানীয়ের সঙ্গে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয় লাকীকে। সেটা খাওয়ার পর আর তার কোনো কিছুই মনে নেই।

এরপর সোমবার সকালে ঘুম থেকে জেগে তিনি ফরিদপুর রথখোলা যৌন পল্লীতে রয়েছেন বলে জানতে পারেন।

লাকী বলেন, ‘সোমবার দুপুরে সেখানে দুই নারী তাকে সহযোগিতা করবেন বলে সেখান থেকে অটোরিকশায় করে আদালতপাড়ায় নিয়ে যান। সেখানে তাদের কথাবার্তা শুনে আমার সন্দেহ হয়। আমি বুঝতে পারি ওরা আমাকে নিয়ে কিছু করার চেষ্টা করছে। তখন আমি তাদের কাছে ভাত খাওয়ার কথা বললে তারা আমাকে একটি হোটেলে নিয়ে যান। ওই হোটেলে গিয়ে আমি চিৎকার শুরু করলে লোকজন ছুটে আসে। স্থানীয় লোকজন ওদেরকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ওসি এ এফ এম নাসিম সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পতিতাবৃত্তির কাজের এফিডেভিট করতে তারা মেয়েটিকে আদালত পাড়ায় নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মেয়েটির চিৎকার করলে স্থানীয় জনগণ তাদেরকে ধরে ফেলে।

খবর পেয়ে পুলিশ ওই তরুণীকে উদ্ধার ও ঘটনাস্থল থেকে তিনজন এবং যৌনপল্লী থেকে আরো একজনসহ মোট চারজনকে আটক করে। এ ব্যাপারে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

 

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি