মারধরের চারদিন পার হলেও গ্রেফতার হয়নি রনি!

চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের নেতা নুরুল আজিম ওরফে রনির হাতে ব্যবসায়ীকে চড়-থাপ্পড় খাওয়া নগরীর ইউনিএইড কোচিং সেন্টারের মালিক রাশেদ মিয়ার অফিস থেকে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সিসিটিভির রিসিভারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র উধাও হয়ে গেছে।

কে বা কারা কোনো এক সময় এসব নিয়ে গেছে। এ নিয়ে রাশেদ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। এদিকে চারদিন পার হলেও এখনও গ্রেফতার হয়নি মারধর করা ছাত্রলীগ নেতা রনি।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে  মামলার বাদী ও কোচিং সেন্টার মালিক রাশেদ মিয়া বলেন, এরই মধ্যে আমার অফিস থেকে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সিসিটিভির রিসিভারসহ মূল্যবান যন্ত্রাংশ লুট করে নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবারের মধ্যে কোনো এক সময় এমনটি করা হয়ে থাকতে পারে। এ সময়ে কোচিং সেন্টারটি একরকম বন্ধ ছিল। রাশেদ বলেন, আমার ধারণা যারা আমাকে মারধর করেছে ও প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি দিচ্ছে তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় আমি চকবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, অব্যাহত হুমকির মুখে এখনও আমি আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে দিন কাটাচ্ছি।

এর আগে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি রাশেদ মিয়ার অফিসেই তাকে (রাশেদ) বেধড়ক চড়-থাপ্পড় মেরেছিলেন। সিসিটিভিতে ধারণ করা এর ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এই ফুটেজ ও প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ রাশেদের অভিযোগকে বৃহস্পতিবার মামলা হিসেবে গ্রহণ করে। পরে রাতে ছাত্রলীগ রনিকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়।

পুলিশ বলছে, গ্রেফতার এড়াতে রনি আত্মগোপন করেছেন। পাঁচলাইশ ও চকবাজার থানা পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। তাকে গ্রেফতারে একাধিক স্থানে অভিযানও চালিয়েছে। তবে ফেসবুকে বেশ সক্রিয় দেখা গেছে রনিকে।

পাঁচলাইশ থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ জানান, ‘রনিকে গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। শনিবার রাতেও তাকে ধরার জন্য নগরীর বিভিন্ন স্থানে রেইড দিয়েছি। তাকে পাওয়া যায়নি।’

উল্লেখ্য, ১৭ ফেব্রুয়ারি জিইসি মোড়ে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং ইউনিএইড-এর মালিক রাশেদ মিয়াকে তার কোচিং সেন্টারের অফিসে ঢুকে এক নাগাড়ে ৬ মিনিট চুলের মুঠি ধরে চড়-থাপ্পড় মারে রনি। ২০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে রনি এ কাজ করে বলে রাশেদ পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। একই দাবিতে ১৩ এপ্রিল রাশেদকে তুলে নিয়েও মারধর করে রনি ও তার সহযোগীরা।

এর আগে ৩১ মার্চ চাঁদার দাবিতে চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ জাহেদ খানকে মারধর করে রনি। ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এর আগে ২০১৬ সালে হাটহাজারীতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একটি ভোট কেন্দ্রের বাইরে অস্ত্রসহ আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালত রনিকে ২ বছরের সাজা দেন।