গৃহবধূর লাশ ফেলে পালিয়েছে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় পাখি (২২) নামে এক গৃহবধূর লাশ হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে গেছে তার স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন। নিহতের পরিবারে দাবি পাখিকে পিটিয়ে মারার পর হাসপাতালে আনা হয়। এ ঘটনায় শ্রীনগর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

পাখি বেগমের বাড়ি লৌহজং উপজেলার গোয়ালীমান্দা এলাকায়। তার শশুর বাড়ি শ্রীনগর উপজেলার দয়াহাটা মজিতপুর এলাকায়। রোববার দিবা গত রাত আড়াই টার সময় পাখিকে সিরাজদিখান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

নিহত পাখি বেগমের বড় ভাই বাহাদুর হোসেন জানান, আমার বোনের দেড় বছর আগে মো. বাবু মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে তিন মাসের একটি মেয়ে সন্তান আছে। বিয়ের পর আমার বোনের স্বর্নের গহনা বাবুর বোনের স্বামীকে দিয়ে দেয়। আমার বোন গহনার কথা জানতে চাইলে ওর স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন মারধর করত। রোববার রাত সাড়ে ২টার দিকে বাবু ফোন দিয়ে জানায় আমার বোন অসুস্থ। তাকে সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। ৩০ মিনিটের মধ্যে হাসপাতালে গিয়ে আমার বোনের লাশ দেখতে পাই। ওর স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন কেউ নেই। তিনি দাবি করেন, তার বোনকে শশুর বাড়ির লোকজন মেরে ফেলেছে। মারার পর আত্মহত্যা দেখানোর জন্য ঝুলিয়ে রেখেছিল শশুর বাড়ির লোকজন। তাইতো সবাই পালিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ঘটনার রাতে পাখির সাথে ওর স্বামীর গহনা নিয়ে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে পাখিকে মার ধর করা হয়। মানসিক চাপ ও দৈহিক নির্যাতন সইতে না পেরে ঘরের ফ্যানের সাথে ফাসিঁ দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে পাখি। সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দুলাল হোসেন জানান, রোববার দিবা গত রাতে ওই গৃহবধূকে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আস হয়। তিনি জানান হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

শ্রীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদ উদ্দিন জানান, প্রাথমিক ভাবে তদন্ত করে জানা গেছে ওই গৃহবধুর ওপর তার স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন সময় শারিরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছে। তবে এটা আত্মহত্যা না হত্যা তা ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে বোঝা যাবে। তিনি আরো জানান, গতকাল রাত থেকে নিহত ওই গৃহবধুর স্বামী ও তার শশুর বাড়ির লোকজন পলাতক আছে।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, মাওয়া (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি।