কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নিয়ে আজ বুধবারের মধ্যেই প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে হাজার হাজার শিক্ষার্থী শাহবাগ ও নীলক্ষেত অবরোধ করে মিছিল করছে।

একই দাবিতে রাজধানীসহ দেশজুড়ে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও একই কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের সাথে শামিল হয়ে সড়কে নেমে বিক্ষোভ করছেন রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।

বুধবার সকাল ১০টার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। আবাসিক হলগুলো থেকে ছাত্র ও ছাত্রীরা দলে দলে মিছিল নিয়ে যোগ দিচ্ছেন।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

উল্লেখ্য,  গত ৮ এপ্রিল কোটা সংস্কারের দাবিতে শাহবাগে বিক্ষোভ করে ঢাবিসহ বিভিন্ন সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রার্থীরা। সকাল থেকেই শান্তি পুর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিলে এ পর্যায়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশের সাথে দফায় আন্দোনকারীদের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন কয়েকজন শিক্ষার্থী।

পুলিশের অ্যাকশনের পর শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা অবস্থান নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও টিএসসি এলাকায়। পরে রাত ১টার দিকে তারা ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামানের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা উপাচার্যের বাসভবনের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। তারা ব্যাপক ভাঙচুর চালান এবং  ভেতরে থাকা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। আশপাশের কয়েকটি মোটরসাইকেলেও তারা আগুন দেন। রাত আড়াইটা পর্যন্ত এই অবস্থা চলে।

এরপর কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দেয় সরকার। পড়ে সোমবার (৯ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় আন্দোলনকারীদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তখন আগামী ৭ মের মধ্যে কোটা সংস্কারে দাবি পূরণ করা হবে বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেয়া হয়। তখন শিক্ষার্থীরা এ সময় পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেন।

তবে আন্দোলনকারীদের বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর বিরূপ মন্তব্য ও জুন মাসে বাজেটের পর কোটা সংস্কার করা হবে বলে অথর্মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বক্তব্যকে ঘিরে ফের মঙ্গলবার থেকে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

এখন শিক্ষার্থীরা বলছেন, তারা আর ৭ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না। কোটা সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ঘোষণা আসতে হবে এবং গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

এ দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে মঙ্গলবারের পর আজও রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন।

আজ এ পর্যন্ত ধানমণ্ডিতে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা মিরপুর সড়ক ও ফার্মগেটে এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা গ্রিন রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন বলে জানা গেছে।

এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস এবং পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করছেন।