কোটা সংস্কার আন্দোলনকে বিভক্তির ষড়যন্ত্র
গত দুই মাস ধরে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু গতকাল সোমবার কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা দুটি দলে ভাগ হয়ে যায়। সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকে বিভক্ত করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে।
সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতৃত্বে পরিচালিত কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা রোববার কোটা সংস্কারের দাবিতে গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে। সেদিন দুপুরে তারা হাজার হাজার ছাত্র নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে রাত ৮টায় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটার পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ নিয়ে রোববার রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় ছাত্রলীগও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। সোমবার সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ২০ নেতা কোটা সংস্কারের পাঁচ দফা দাবি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। এ সময় ছাত্রদের দাবি বাস্তবায়নে সরকারের পক্ষ থেকে ৭ মে পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা পদ্ধতির যৌক্তিক সংস্কার করা হবে। সরকার আন্দোলনকে ইতিবাচকভাবে দেখছে। তখন আন্দোলনের নেতারা আন্দোলন স্থগিত করার ঘোষণা দিয়ে বিকালে ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন।
কিন্তু তখন টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে সমবেত ছাত্রদের একাংশ এক মাসের জন্য আন্দোলন স্থগিত করার বিরোধিতা করেন। তবে সরকারের দাবি মানার আশ্বাসের পরও আন্দোলন চালিয়ে গেলে ছাত্রলীগ হামলা করবে বলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা সার্বিক পরিস্থিতিতে আন্দোলন স্থগিত সিদ্ধান্ত থাকবে কথা জানিয়ে সবাইকে হলে ফিরে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু একপর্যায়ে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাদের বাদ দিয়ে নিজেরা কমিটি গঠন করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তবে বেশিরভাগ সাধারণ শিক্ষার্থী হলে ফিরে গেলে রাত ৯টার দিকে বেসরকারি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্রী বিপাশা চৌধুরীকে দিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করার কথা জানিয়ে বামপন্থী অংশও রাজু ভাস্কর্য ছেড়ে যায়।
তবে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকে বিভক্ত করার জন্য একটি মহল এই ষড়যন্ত্র করছে। ওই ষড়যন্ত্রের ফাঁদে শিক্ষার্থীদের সাড়া না দেয়ার অাহবান জানানো হয়েছে। এর জন্য আগামী ৭ মে পর্যন্ত ধৈর্য ধরতও বলা হয়েছে।