প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গাদের দেখতে কক্সবাজার আসছেন মিয়ানমারের মন্ত্রী

সোমবার (২ এপ্রিল) রোহিঙ্গা বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক জানান রোহিঙ্গাদের অবস্থা দেখার জন্য এই প্রথমবারের মতো কক্সবাজার পরিদর্শন করবেন মিয়ানমারের একজন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের একজন মন্ত্রী এই মাসে ঢাকা সফর করবেন এবং তিনি কক্সবাজার সফর করতে সম্মত হয়েছেন। আমরা পরিকল্পনা করছি তাকে নাইক্ষ্যংছড়ি নিয়ে যাওয়ার।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে জেনোসাই স্টাডিস আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেছেন পররাষ্ট্র সচিব। ১০-এর অধিক দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছেন এ সেমিনারে।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ মিয়ানমার জিরো লাইনে প্রায় পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করছে- যাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে, অত্যাচার করা হয়েছে কিন্তু তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে যখন আমাদের আলোচনা হয়, তখন আমরা বলেছিলাম- যেহেতু তারা (রোহিঙ্গারা) মিয়ানমার সীমানার মধ্যে আছে তাই তাদের ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নেবে কিনা। তারা এ বিষয়ে রাজি হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি দুই দেশের কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত যৌথ কমিটি জিরো লাইন পরিদর্শন করেছে এবং সেখানে অবস্থাররত রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগের বাড়িঘর পুড়ে যায়নি বলে তাদের ফেরত যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করে। আমরা চেষ্টা করছি একটি মেকানিজম তৈরি করার যাতে করে তারা (রোহিঙ্গারা) ফেরত যেতে পারে।’

ভাসানচরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘সরকারের কাছে অনেক অপশন আছে এবং ভাসানচর তার একটি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সব অপশন বিবেচনা করছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বলছে, কক্সবাজারে যেখানে রোহিঙ্গারা আছে সেই জায়গাটি অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ। আবার তারাই বলছে, তাদের (রোহিঙ্গাদের) অন্য জায়গায় সরানো যাবে না। তাহলে একটি অপশনই রয়ে যায় এবং সেটি হচ্ছে কক্সবাজারে যে বাংলাদেশিরা বাস করে তাদের অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া। এটাই কী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেখতে চায়! আমাদের কাছে এখন একটি অপশন আছে এবং সেটি হচ্ছে তাদের (রোহিঙ্গাদের) একসঙ্গে পাশাপাশি থাকতে হবে।’

ভাসানচরের বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, ‘যখন জায়গাটি তৈরি হবে তখন আমরা হেলিকপ্টারে করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সেখানকার অবস্থা দেখানোর জন্য নিয়ে যাবো।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারতের ভূমিকা বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দেশের নিজস্ব বাধ্যবাধকতা থাকে, অগ্রাধিকার থাকে।’ তবে তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সাম্প্রতিক আচরণে বাংলাদেশ খুশি।’

ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শংকর সস্প্রতি রাখাইন সফর করে সেখানে বাড়ি নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অংশ বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক।এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব এই মাসে ঢাকায় আসছেন এবং তার সঙ্গে এ বিষয়ে আমার খোলামেলা আলোচনা হবে।’