কে‌জিতে নয়, বি‌ক্রি হচ্ছে দরদা‌মের ভিত্তিতে

শরীয়তপু‌রের কাঁঠালবা‌ড়ি ঘা‌টে ফে‌রির অপেক্ষায় বাস, ট্রাক, প্রাই‌ভেটকারসহ অসংখ্য যানবাহন। চারপা‌শে ঘুটঘু‌টে‌ অন্ধকার। মা‌ঝে মা‌ঝে গা‌ড়ির হেডলাইট জ্ব‌লে উঠ‌লে ঘাট সংলগ্ন দোকানপাটের দোকানিদের চুপচাপ ব‌সে থাক‌তে দেখা যায়। ত‌বে একটি টং দোকা‌নের সাম‌নে কিছুটা ব্যতিক্রম।

ক্রেতা‌-বি‌ক্রেতা‌কে উচ্চস্ব‌রে দরদাম কর‌তে দেখা যায়। ‘দাম ক‌ত? এক দাম ৪০ টাকা কে‌জি। ওই যে বড়, আস্তটার দাম? দেড় হাজার টাকা।’ -এভাবেই দরদাম করছিলেন তারা। সাম‌নে এগি‌য়ে যে‌তেই দেখা যায়, দোকান ভর্তি বি‌ভিন্ন সাই‌জের কঁচু ফা‌লি ফা‌লি ক‌রে কাটা। কোনোটি ৫ কে‌জি, কোনোটি ৭ কে‌জি আবার কোনোটির ওজন ১০ কে‌জি। ত‌বে আস্ত কঁচুর গাছ কে‌জিতে নয়, বি‌ক্রি হচ্ছে দরদা‌মের ভিত্তিতে।

কঁচু বি‌ক্রেতার নাম ফ‌সিউল্লাহ। বয়স ৬০ বছ‌রের বেশি হবে। আলাপকা‌লে জানান, ১৪ বছর যাবত কঁচু বিক্রি করেই প‌রিবার প‌রিজন নি‌য়ে জীবনধারন কর‌ছেন। গত ১৩ বছর শিবচ‌রে পু‌রো‌নো‌ ফে‌রিঘা‌টে কঁচু বিক্রি করলেও গতবছর থে‌কে এ নতুন ঘা‌টে‌ (কাঁঠালবা‌ড়ি ফেরিঘা‌ট) কঁচু বে‌চেন। সকাল থে‌কে গভীর রাত পর্যন্ত এক দা‌মে কচু বি‌ক্রি ক‌রেন।

তি‌নি আরও জানা‌ন, এ এলাকায় বেশ বড় সাই‌জের মান কঁচু উৎপাদন হয়। মান কঁচু দি‌য়ে ইলিশ মাছ ও গরুর মাংস খে‌তে বেশ সুস্বাদু। এ কঁচু এমনিতেও চি‌বি‌য়ে খাওয়া যায়। তাছাড়া নারিকেল ও কঁচু কু‌ড়ি‌য়ে মু‌ড়ির সা‌থে মি‌শি‌য়ে খাওয়া যায়। এসব কথার মাঝেই দেড়হাজার টাকা হাকা‌নো কঁচু‌টি ১ হাজার ৩০০ টাকায় বি‌ক্রি হয়। ত‌বে ফা‌লি করা কঁচুর একদাম, প্র‌তি কে‌জি ৪০ টাকা। প্র‌তি‌দিন গ‌ড়ে ৫/৬ মন কঁচু বি‌ক্রি ক‌রেন তিনি। ত‌বে আশেপা‌শের এলাকার মাদরাসার ক্রেতারা যে‌দিন কিনতে আসেন সে‌দিন ৯-১০ মনও বি‌ক্রি হয়। কঁচু বিক্রির আয় কেমন হয়? জানতে চাইলে বৃদ্ধ হে‌সে ব‌লেন, ১৪ বছর কঁচুর বেপা‌রি‌গি‌রি ক‌রি, লাভ তো হয়ই, না হ‌লে বউ ছে‌লে-মে‌য়ে নি‌য়ে‌ কেম‌নে চলতা‌ছি।