উন্নয়নশীল দেশের উত্তরনে অর্জন ও চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশ যে গত কয়েক বছরে অর্থনীতির সব কটি মানদন্ডে আশানুরুপ ফলাফল অর্জন করেছে তার স্বীকৃতি আজ জাতিসংঘের সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির ঘোষনায় আরো স্পষ্ট হয়েছে। সিডিপির ধার্য করা মানদন্ডের তিনটি সুচকেই বাংলাদেশ উত্তীর্ন হয়েছে। এখন টেকসই উন্ননের এই ধারা আমাদের বজায় রাখতে হবে আরো তিনটি বছর।

২০২১ সাল নাগাদ জাতিসংঘের  অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিল (ইকোসোক)সল্পোন্নত দেশের এই তালিকা উত্তরনের সুপারিশ করবে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অনুমোদনের জন্য আরও তিন বছর অর্থাৎ ২০২৪ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বাংলাদেশকে। এরপরই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘের তালিকায় থাকবে বাংলাদেশ।

তবে এই বড় অর্জনের জন্য কিছু টা দাম ও চুকাতে হতে পারে। আগামী নয় বছর পর বাংলাদেশ হারাবে বিশেষ বাজার সুবিধা। ২০২৭ সাল পর্যন্ত আমরা উপভোগ করবো শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা। ফার্মাসিউটিকাল সেক্টরে মেধাসত্ব সুবিধার মেয়াদ থাকবে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত।

তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল দাতা দের কাছ থেকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আমরা যে রেয়াতি সুদে ঋন পেতাম তা কমে যাবে অনেকটাই। বিকল্প অর্থায়নের জন্য তাই ভাবতেই হতে পারে। সাধারন মানুষের উপর তাই করের বোঝা বাড়বে তাতে সন্দেহ নেই।

বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলে অনেকেই মত দিচ্ছেন, কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতির কাঠামোগত যে দুর্বলতা আছে তা না কাটিয়ে উঠতে না পারলে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা কঠিন হয়ে পড়বে।

জিএসপি প্লাসে অন্তর্ভুক্ত হতে আমাদের দরকষাকষি করতে হতে পারে। ইউরোপের দেশ গুলো তে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধায় ছেদ পড়তে পড়তে পারে।

বিশ্বব্যাংক ০.৭৫ শতাংশ হারে যে ঋন পরিশোধের সু্যোগ দিচ্ছে , তা বেড়ে ২.৫ শতাংশে পৌছাবে। তাই প্রকল্পের খরচ কিছুটা বেড়ে যাবে।ফলশ্রুতিতে, সক্ষ্মমতা বাড়ানো এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়ানোর উপর জোর দিতে হবে।

সম্পূরক শুল্ক,নিয়ন্ত্রনমুলক শুল্ক আরোপের সুযোগ সীমিত হবে। তাই রাজস্ব আহরনে কিছু চ্যালেণজ মোকাবেলা করতে হতে পারে।

এখানে মূল চ্যালেঞ্জ হল, এলডিসির এই উত্তরনে আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের এবং নীতি নির্ধারকদের আরো দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। তাদের দরকষাকষির সক্ষমতা বাড়াতে হবে, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে আরো দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। যদি দ্দক্ষতা বৃদ্ধি না পায় তবে, বাংলাদেশ কে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে আগের চেয়ে আরো বেশি খরচ করতে হবে। যা দেশের সার্বিক উন্নয়নে অন্ত্রায় হয়ে থাকবে।

আখলাক আহমেদ রুবাব, বিশেষ প্রতিনিধি