বনানীর সামরিক কবরস্থানে পাইলট আবিদের শেষ ঠিকানা, স্ত্রী লাইফ সাপোর্টে

নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের পাইলট আবিদ সুলতানের দাফন হচ্ছে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে। ইট-পাথরের শহরেই বেড়ে ওঠা। জীবনের শেষ বেলার ডাক পড়ল শহরেই। যে জীবন শহর শহরে ছুটে বেড়াত, সে জীবনের নিথর দেহ নগরেই আটকা পড়ল।

নিহত ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের ভাই খুরশীদ মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পরিবারের সবার মতামতের ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আবিদ সুলতান নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলা সদর ইউনিয়নের খট্টেশ্বর রানীনগর গ্রামের খানপাড়ার এমএ কাশেম খানের ছেলে। তার বাবাও পাইলট ছিলেন। তার মা সালেহা বেগম।

তিনি বিয়ে করেছেন নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলায়। তার একমাত্র ছেলে তানজিব বিন সুলতান। তানজিব ঢাকায় ‘ও’ লেভেলে পড়াশোনা করছে।

আবিদের লাশ বনানীর সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। চাকরির সুবাদে আবিদের বাবা এমএ কাশেম খান প্রায় ৬৫ বছর আগে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন।

আবিদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। তারা পাঁচ ভাই। গ্রামের বাড়িতে স্মৃতি চিহ্ন বলতে রয়েছে ইটের প্রাচীর ঘেরা পুরনো মাটির বাড়ি। আবিদের বাবা-মা মারা যাওয়ার পর আত্মীয়রা গ্রামের পৈতৃক বাড়িটি সংস্কার করে বসবাস ও জমি-জমা দেখাশোনা করছেন।

রানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোনিয়া বিনতে তাবিব বলেন, আবিদ সুলতানের পৈতৃক বাড়িটি পরিদর্শন করেছি। দীর্ঘদিন গ্রামের বাড়িতে তাদের যাওয়া-আসা নেই। তাই এখানে স্মৃতি চিহ্ন বলতে তাদের মাটির বাড়ি আছে।

১২ মার্চ সোমবার ঢাকা ছেড়ে যাওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পতিত হয়।

৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ বেলা ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি বিমানবন্দরের পাশের মাঠে বিধ্বস্ত হয়। কাঠমান্ডুর নরভিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবিদ সুলতান মঙ্গলবার ভোরে মারা যান।

এদিকে স্বামী আবিদের মৃত্যুতে স্ত্রী আফসানা খানমও গুরুতর অসুস্থ পড়েন। তাকে বর্তমানে লাইফ সাপোর্টে রেখে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে।