ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে লাশ বহনকারী কার্গো বিমান

নেপালে ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ২৬ জন বাংলাদেশির মধ্যে ২৩ জনের লাশ ঢাকায় আসছে। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দর থেকে লাশ বহনকারী বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি কার্গো বিমান ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

বিমানটি বেলা ৩টায় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবে। বিমানবন্দর থেকে মরদেহের কফিনগুলো সরাসরি আর্মি স্টেডিয়ামে নেওয়া হবে। সেখানে বিকাল ৪টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় উপস্থিত থাকবেন বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, নিহতদের শনাক্ত করতে সেসব স্বজন নেপাল গিয়েছিলেন একই সময়ে তারাও ইউএস-বাংলার একটি ফ্লাইটে ঢাকায় চলে এসেছেন।

এর আগে আজ সোমবার সকালে নেপালে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর করেছে নেপাল কর্তৃপক্ষ। এরপর দূতাবাসের আঙ্গিনায় লাশের কফিনগুলো সারিবদ্ধ করে রাখা হয়। সকাল ৯ টায় জানাজা শেষে নিহতদের নাম লেখা কফিনের পাশে স্বজনরা কিছুক্ষণ থাকার সুযোগ পান। সেখানে আপনজনের নাম লেখা কফিন দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। এরপর সোয়া ৯টার দিকে বিমানবন্দরে নেওয়ার জন্য গাড়িতে তোলা হয় কফিনগুলো।

এদিকে,ওই দুর্ঘটনায় আহত ১০ বাংলাদেশির ৬ জনকে ইতোমধ্যে দেশে ফিরিয়ে এনে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকি চার জন সিঙ্গাপুর, নেপাল ও ভারতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ও হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিমান বাহিনীর বিমানযোগে ২৩ জনের লাশ ঢাকায় আনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক মো. নূর ইসলাম।

বেলা ৩টার দিকে শাহজালালের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টারমাক-১ এ লাশবাহী বিমানটি অবতরণ করবে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘লাশ দেশে ফেরার পর আর্মি স্টেডিয়ামে জানাজা হবে। এরপর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

গত ১২ মার্চ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিমান কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় ৪৯ আরোহীর মৃত্যু হয়, যাদের মধ্যে চার পাইলট-ক্রুসহ ২৬ জন বাংলাদেশি। নিহত বাংলাদেশিরা হলেন- ফয়সাল আহমেদ, আলিফউজ্জামান, বিলকিস আরা, বেগম হুরুন নাহার বিলকিস বানু, আখতারা বেগম, নাজিয়া আফরিন চৌধুরী, মো. রকিবুল হাসান, সানজিদা হক, মো. হাসান ইমাম, মো. নজরুল ইসলাম, আঁখি মনি, মিনহাজ বিন নাসির, ফারুক হোসেন প্রিয়ক, তামারা প্রিয়ন্ময়ী, মো. মতিউর রহমান, এস এম মাহমুদুর রহমান, তাহেরা তানভীন শশী রেজা, পিয়াস রায়, উম্মে সালামা, অনিরুদ্ধ জামান, মো. নুরুজ্জামান ও মো. রফিকুজ্জামান, ফ্লাইটের পাইলট আবিদ সুলতান, কো-পাইলট পৃথুলা রশীদ এবং দুই ক্রু শারমীন আক্তার নাবিলা ও খাজা হুসাইন।

নিহতদের মধ্যে ২৩ জনের লাশ শনাক্ত করে দেশে ফেরত আনা হচ্ছে। নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস রবিবার দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নিহত ২৬ বাংলাদেশির মধ্যে আলিফউজ্জামান, পিয়াস রায় ও মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের লাশ এখনও শনাক্ত হয়নি।