চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্মিত হচ্ছে দেশের সবচে বড় ‘রাবার ড্যাম’

চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা নদীর রেহাইচর নামক স্থানে নির্মিত হতে যাচ্ছে দেশের সবচে বড় ‘রাবার ড্যাম’। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি, এই ড্যাম বাস্তবায়ন হলে বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদী থেকে ব্যাক প্রেসারে আসা পানি আটকে রেখে বিশাল জলাধার সৃষ্টি করে তা সেচসহ বিভিন্ন কাজে লাগানো যাবে।

তবে এই ড্যাম বাস্তবায়ন হলে নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি এটি জীব বৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে আশংকা পরিবেশবাদীদের। চাঁপাইনবাবগঞ্জে বয়ে যাওয়া ৪টি নদীর মধ্যে অন্যতম মহানন্দা। এটি জেলার ভোলাহাট উপজেলার যাদুনগর এলাকা দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পদ্মায় মিলিত হয়েছে।

উজান থেকে পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় পলি জমে নাব্য হ্রাস পেয়েছে। এতে শুষ্ক মৌসুমে মহানন্দা অনেকটা পরিণত হয় মরা নদীতে। এমন প্রেক্ষাপটে স্থানীয় নেতাদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১১ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক জনসভায় নদী খনন কার্যক্রম বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই ধারাবাহিকতায় রাবার ড্যামের প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। সৈয়দ সাহিদুল আলম (নির্বাহী প্রকৌশলী, পানি উন্নয়ন বোর্ড, চাঁপাইনবাবগঞ্জ) বলেন, পদ্মার ব্যাক প্রেসারে যে পানি জমা হবে তা একটা জলাশয়ের মত জায়গায় জমা করা হবে, এই পানি দিয়ে এলাকার আর্থসামাজিক ব্যাপক উন্নয়ন হবে।

তবে এই ড্যাম তৈরি হলে এর ভাটিতে থাকা সেচ প্রকল্পগুলো মারাত্বক হুমকির মুখে পড়বে বলে দাবি পানি ব্যবস্থাপনা সমিতি সংশ্লিষ্টদের। এই রবার ড্যাম বানানো হলে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে। ৮/৯টা প্রকল্প নষ্ট হবে। সেচ প্রকল্পের আওতার বাইরে ড্যাম বানালে আমাদের জন্য উপকার হয়। ভাটিতে থাকা পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির নেতৃবৃন্দ আর সমতলের নদীতে ড্যাম তৈরি কোন সমাধান নয় উল্লেখ করে নদী খননের মাধ্যমে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনার দাবি পরিবেশ আন্দোলনের এই নেতার।

রবিউল হাসান ডলার (কো-অর্ডিনেটর, সেভ দ্য নেচার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ) বলেন, রবার ড্যাম পাহাড়ি নদীতে নির্মাণ করা হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মত সমতল নদীর জন্য এই ড্যাম নয়। ৯৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীর ৩৬ কিলোমিটার খননসহ ৩৫৩ মিটার দৈর্ঘ্য এই রাবার ড্যাম নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১শ ৬০ কোটি টাকা।