আসিয়ান সম্মেলনে বেশ গুরুত্ব পেয়েছে রোহিঙ্গা সংকট, চাপের মুখে সু চি

আসিয়ান সম্মেলনে বেশ গুরুত্ব পেয়েছে রোহিঙ্গা সংকট। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়া ও আসিয়ান নেতাদের চাপের মুখে ছিলেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে রোহিঙ্গা নিধনের ব্যাপারে তার নীরব ভূমিকায় সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে এক অর্থে একঘরে হয়ে পড়েছেন তিনি। সম্মেলনকালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে সু চিসহ আসিয়ানভুক্ত কয়েকটি দেশের নেতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকরা।

এএফপির খবরে বলা হয়, বিক্ষোভের কারণে অনেকটা ভেস্তে যায় সম্মেলন। সু চি ও কম্বোডিয়ার নেতা হুন সেনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সমাবেশ করে বিক্ষোভকারীরা। শনিবার সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে থেকে শতশত বিক্ষোভকারী সিডনির রাস্তায় অবস্থান নেয়। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান লেখা ব্যানার-ফেস্টুন বহন করে তারা।

১৭ থেকে ১৮ মার্চ এ দুই দিন অস্ট্রেলিয়া- আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল, মালয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট নাজিব রাজাকের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিতর্কিত নেত্রী সু চি। তিনি এমন সময় আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দেন যখন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে তাকে বিচারের দাবি করেন অস্ট্রেলিয়ার আইনপ্রণেতারা। সু চিকে আদালতে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোই একমাত্র সমাধান বলেন এক ব্রিটিশ মন্ত্রী।

সম্মেলনে সু চির পাশাপাশি দাঁড়িয়েই তার ব্যাপক সমালোচনা করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নানজিব রাজাক। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা নিধনের জন্য নীরবতা অনেকটাই দায়ী। তিনি আরও বলেন, রাখাইনের অস্থিরতাকে এখন শুধু একটি অভ্যন্তরীণ সংকট হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সহিংসতার শিকার হওয়া রোহিঙ্গারা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে। আইএসের এমন উত্থানে আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে সু চির নিন্দা জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়াও।

সম্মেলনে যোগদানকারী নেতারা ক্রমবর্ধমান সহিংস জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ মোকাবেলায় আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে একমত হয়েছেন। নিজ নিজ দেশের মানবাধিকার রক্ষায় সংকট সমাধানের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন তারা।

বৈঠক শেষে রবিবার সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল বলেন, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উল্লেখযোগ্য আলোচনা করেছি। অং সান সু চি নিজে এ নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য রেখেছেন। আসলে এটা একটি অত্যন্ত জটিল সমস্যা। সবাই চাইছেন দুর্ভোগের সমাপ্তি। তবে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হসেইন লুং রোহিঙ্গা সংকটকে আসিয়ান দেশগুলোর সবার জন্য উদ্বেগের বলে আখ্যায়িত করেছেন।