দশ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে দারিদ্র্যমুক্ত হবে বাংলাদেশঃ অর্থমন্ত্রী

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ফিন্যান্স বিভাগের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত ‘টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের লক্ষ্যেই অর্থায়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে দারিদ্র্যমুক্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন। এ অর্জনের পথে যে চ্যালেঞ্জগুলো আছে তা মোকাবেলা করতে পারলেই এটি অর্জন সম্ভব বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, গত তিন বছরে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি আমরা। এই বছরের মধ্যে তা সাড়ে ৭ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। তবে এই প্রবৃদ্ধি দিয়ে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব নয়। দারিদ্র্য দূর করতে হলে অবশ্যই ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে।

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি সাফল্য অর্জন করেছে। যদিও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের বছর হিসেবে ২০৩০ নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে বাংলাদেশ ২০২৪ সালের মধ্যেই দারিদ্র্য দূর করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে পারবে।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যেসব সম্পদ পেয়েছি, তার চেয়ে বেশি সম্পদ আগামী প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে হবে। রাষ্ট্রের জনকল্যাণ ও উন্নয়নমূলক কাজগুলো বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। যেন কোনো গোষ্ঠীই পিছিয়ে থাকতে না পারে। প্রত্যেক মানুষই এই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে এর সুবিধা ভোগ করতে পারে।

এর আগে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, অতিরিক্ত অর্থায়ন ও প্রবৃদ্ধি অনেক সময় প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিঘ্ন করতে পারে। তাই আমাদের সবুজ অর্থায়ন ও প্রবৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে।

সম্মেলনে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর সমস্যার কথা উল্লেখ করে অর্থ সচিব মুসলিম চৌধুরী বলেন, ব্যাংকগুলোতে সঞ্চয়ের পরিমাণ কম, কিন্তু ঋণের পরিমাণ বেশি। যা অর্থনৈতিক ঝুঁকি বাড়ায়। এ ঝুঁকি কমাতে সঞ্চয় বা অর্থায়নের পরিমাণ বাড়াতে হবে, ঋণের পরিমাণ কমাতে হবে। যেন অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জন করা যায়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফিন্যান্স বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। অধ্যাপক মোহাম্মদ আফজাল হোসেনের সঞ্চালনায় চবি উপচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী সম্মেলনের সফলতা কামনা করে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলনের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. সালেহ জহুর, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এ এফ এম আওরঙ্গজেব।

আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের শুরুতে নেপালে বিধ্বস্ত বিমানে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ সম্মেলনে দেশ-বিদেশের ৯৫ জন গবেষকের ৬১টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।