প্রশ্ন ফাঁসের ছয় কারণ!

চলমান এসএসসি পরীক্ষায় ধারাবাহিকভাবে প্রশ্ন ফাঁসের ছয়টি কারণ চিহ্নিত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার বিকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দুই ঘণ্টাব্যাপী আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় সভায় এসব কারণ তুলে ধরা হয়। প্রশ্ন ফাঁসে আইসিটি বিভাগ, মাঠ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়ী করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রশ্ন ফাঁসের ছয় কারণ

সভার কার্যপত্রের তথ্যানুযায়ী প্রশ্ন ফাঁসের ছয়টি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলো-

এক. বিজিপ্রেসে প্রশ্ন কম্পোজ, এডিট, প্রিন্ট ও প্যাকেজিং পর্যায়ে প্রায় ২৫০ ব্যক্তির সম্পৃক্ততা রয়েছে। তারা প্রশ্নপত্র কপি করতে না পারলেও এর সঙ্গে জড়িতরা স্মৃতিতে ধারণ করতে পারেন। এভাবেও সেখান থেকে প্রশ্ন ফাঁস করা সম্ভব।

দুই. নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে ট্রেজারি বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু অনেক কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেন না।

তিন. অতিরিক্ত পরীক্ষা কেন্দ্রের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অথচ সেখানে পর্যাপ্ত জনবল নেই। এছাড়া ভেন্যুগুলো থেকে মূল কেন্দ্রে দূরত্ব অনেক বেশি। ফলে ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্র সচিব প্রশ্নের প্যাকেট খুলতে বাধ্য হচ্ছেন। সেখান থেকেও প্রশ্ন ফাঁসের সুযোগ রয়েছে।

চার. পরীক্ষার্থী বা পরীক্ষার সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্তদের স্মার্টফোন ব্যবহার বন্ধ করা কষ্টসাধ্য। গুটিকয়েক কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণে মূল প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে। এটা পরীক্ষার শুরুর ১৫ দিন আগে থেকেই করার প্রস্তাব করা হয়।

পাঁচ. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের চিহ্নিত করতে গোয়েন্দা বাহিনীর লোকবল, অবকাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত স্বল্পতার কারণে কাক্সিক্ষত নজরদারি করা সম্ভব না। দুষ্কৃতকারীদের তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার ও শাস্তির আওতায় না আনায় অন্যরাও অপরাধ করতে ভয় পাচ্ছেন না। ফলে প্রশ্ন ফাঁস রোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা আরও বাড়াতে হবে। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ১৫ দিন আগে থেকে জোরদার করলে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ করা যাবে।

ছয়. বিটিআরসি কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন আপলোডকারীদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টগুলোকেও শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধান করে সুষ্ঠুভাবে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার প্রধানদের সহযোগিতা চান শিক্ষামন্ত্রী।