সাইনবোর্ড ও ব্যানারে বাংলা আবশ্যক অন্যথায় লাইসেন্স বাতিল
রক্তের বিনিময়ে কেনা এ ভাষা। ভাষা আন্দোলনের পরে যুগ যুগ কেটে গেলেও এখনও সর্বত্র বাংলা ভাষার ব্যাবহার নিশ্চিত হয়নি। স্বাধীন বাংলায় বসবাস করেও বাঙালি ভিনদেশি ভাষার প্রতি অত্যাধিক মাত্রায় আকৃষ্ট।
বাংলাদেশে সরকারি বেসরকারি অফিস-আদালত থেকে শুরু করে প্রায় সর্বত্রই এখন ইংরেজি ভাষার দাপট। আমরা অত্যাধিক মাত্রায় ঝুকে গেছি ইংরেজির দিকে। ভুলে যাচ্ছি আমাদের মায়ের ভাষা, আমাদের বাংলা ভাষার। নতুন প্রযন্ম তো কথাই নেই! বাংলা যেন তাদের মুখে ফোটেই না!
কিন্তু এবার বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে মাতৃভাষাকে যথাযথ সম্মান জানাতে সরব ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ডিএনসিসির আওতাধীন এলাকায় সব ধরনের সাইনবোর্ড, লিফলেট, ব্যানারে বাংলা লেখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তবে ইংরেজি থাকলেও সেটি থাকবে বাংলার পাশাপাশি। আর এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে ডিএনসিসি।
রাজধানীতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স দেওয়া সংস্থা সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স (ব্যবসা করার অনুমতি) নেওয়ার সময়ও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সাইনবোর্ডে বাংলা ব্যবহারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়। অতিরিক্ত একটি সিল দিয়ে ট্রেড লাইসেন্সে লেখা থাকে, ‘সাইনবোর্ড/ব্যানার বাংলায় লিখতে হবে’।
কিন্তু এসব থাকলেও কেউ তা তোয়াক্কা করে না। তবে বিষয়টি আবার সাম্প্রতি হঠাত করে সিটি করপোরেশনের নজরে আসে। ফলে অন্য ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড-ব্যানারের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে ডিএনসিসি।
ডিএনসিসির এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সাইনবোর্ড বা ব্যানার বাংলায় লেখা। সেজন্য প্রথম আমরা উচ্ছেদ অভিযান ও জরিমানা করা হচ্ছে। কেউ না মানলে লাইসন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে পারে কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, সংবিধানের ৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। এছাড়া বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, ১৯৮৭-এর ৩ ধারায়ও সরকারি অফিস, আদালত, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চিঠিপত্র, আইন-আদালতের সওয়াল-জবাব এবং অন্য কাজে বাংলার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
দেশের সর্বত্র বাংলা ভাষার প্রচলন নিশ্চিত করতে ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এক আদেশে দেশের সব সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ব্যানার, গাড়ির নম্বরপ্লেট, সরকারি দফতরের নামফলক এবং গণমাধ্যমে ইংরেজি বিজ্ঞাপন ও মিশ্র ভাষার ব্যবহার বন্ধ করতে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলেন।