‘মুসলমান’ মিউট করে দিলেই মিলবে ছবি মুক্তির ছাড়পত্র!

দুই বাংলার জনপ্রিয় শিল্পীদের নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘চিরদিনের এক অন্য প্রেমের গল্প’ ছবিটি। তবে পূর্ণদৈর্ঘ্য এই ছবিটিতে ব্যবহৃত ‘মুসলমান’ শব্দটিকে নিয়ে সমস্যা দেখিয়েছে ভারতীয় সেন্সর বোর্ড। ছবিতে ব্যবহৃত ‘মুসলমান’ মিউট (মৌন) করে দিলেই মিলবে ছবি মুক্তির ছাড়পত্র। ছবিটির পরিচালকে এমটাই জানিয়েছে ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন (সিবিএফসি)। ছবিটিতে মোট চার বার ‘মুসলমান’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। ছবিটি পরীক্ষার পর সেন্সর বোর্ডের পক্ষ থেকে পরিচালক রঞ্জন চৌধুরীকে পাঠানো একটি তালিকায় নয়টি অদলবদলের কথা জানানো হয়েছে। 

পরিচালক রঞ্জন চৌধুরী জানান, ‘তালিকায় যে কয়টি পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে পঞ্চম-টি খুবই শকিং। সেখানে ‘মুসলমান’ শব্দটি যতবার রয়েছে সেটি মিউট করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যেখানে ‘মুসলমান’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে তার সময়ও উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী এই শব্দ ব্যবহারে সেন্সর বোর্ডের ২ (১২) গাইড লাইন লঙ্ঘন করা হয়েছে, যেখানে সিনেমায় ব্যবহৃত ওই শব্দটি বা সেই সময়কার দৃশ্যটির মাধ্যমে জাতিগত, ধর্মীয় বা অন্য গোষ্ঠীকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে-যেটা কোনমতেই ছবিতে উপস্থাপন করা উচিত নয়’।

যদিও এব্যাপারে সিবিএফসি’এর আঞ্চলিক ডিরেক্টর সম্রাট বন্দোপাধ্যায় কোন মন্তব্য করতে চাননি। তবে চিত্র সমালোচকরা বলছেন ‘মুসলমান’ শব্দটি বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে নতুন নয়। ২০০৬ সালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, নন্দিতা দাস অভিনীত গৌতম ঘোষের ‘পদক্ষেপ’ ছবিতে ‘মুসলমান’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছিল। সেখানে সৌমিত্র নিজেই ‘ওই মুসলমান ছেলেটি’ বাক্যটি ব্যবহার করেছিলেন।

ছবিটিতে বাংলাদেশের নায়িকা শম্পা হাসনাইনের বিপরীতে রয়েছেন ওপারের নায়ক সমদর্শী দত্ত। সঙ্গে আরো রয়েছেন শ্রীলা মজুমদার, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, শুভাশীষ মুখার্জি, সৌমি ঘোষসহ অন্যরা।

ভিন্ন ধর্মের দুই ছেলে-মেয়ের প্রেমের কাহিনী নিয়েই তৈরি হয়েছে ছবিটি। এতে হিন্দু মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন শম্পা। স্পষ্টবাদী ও চঞ্চল প্রকৃতির এই মেয়েটির প্রেম হয়েছে একটি মুসলিম ছেলের সাথে।

এদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে শম্পা বলেন, কয়েকদিন ধরে শুনছিলাম ছবিটা নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে। আজ ভারতীয় বেশ কয়েকটি দৈনিকে খবর দেখলাম এই ইস্যু নিয়ে। আশা করি এ সমস্যাও শিগগিরই সমাধান হয়ে যাবে।