নিজাম হাজারীর পদে থাকা নিয়ে রুল নিষ্পত্তির শুনানিতে বিব্রত হাইকোর্ট
বাংলাদেশের ফেনী-২ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর পদে থাকা নিয়ে রুল নিষ্পত্তির শুনানিতে বিব্রতবোধ করেছে হাইকোর্ট। আজ (সোমবার) বিচারপতি ফরিদ আহমেদের একক বেঞ্চ শুনানিতে বিব্রতবোধ করে মামলার নথি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। ২০১৬ সালের ০৬ ডিসেম্বর নিজাম হাজারীর পদে থাকার বৈধতা নিয়ে জারি করা রুলের বিভক্ত রায় দেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. এমদাদুল হক তার রায়ে রুল মঞ্জুর করে নিজাম হাজারীর পদে থাকাকে অবৈধ ঘোষণা করেন। আর কনিষ্ঠ বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান এ বিষয়ে করা রিট ও রুল খারিজ করে দেন। এরপর আইন অনুসারে রিট আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে গেলে তিনি একক বেঞ্চের কাছে পাঠান। পরবর্তীতে কয়েকটি একক বেঞ্চ ঘুরে মামলাটি বিচারপতি ফরিদ আহমেদের কাছে পাঠানো হয়।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী সত্য রঞ্জন মণ্ডল বলেছেন, আজ (সোমবার) আদালত এ মামলার শুনানি নিতে বিব্রতবোধ করেন। প্রধান বিচারপতি এ মামলার নিষ্পত্তির জন্য নতুন একক বেঞ্চ নির্ধারণ করবেন। ‘সাজা কম খেটেই বেরিয়ে যান সাংসদ’ শিরোনামে ২০১৪ সালের ১০ মে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০০০ সালের ১৬ আগস্ট অস্ত্র আইনের এক মামলায় নিজাম হাজারীর ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু দুই বছর ১০ মাস কম সাজা খেটে কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।’
পরে ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে নিজাম হাজারীর সংসদ সদস্য পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন ফেনী জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া। আবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ৬৬(২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুসারে, কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার এবং সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য হবেন না, যদি তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছরের কারাদ-ে দ-িত হন এবং তার মুক্তি লাভের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়ে থাকে। সে হিসেবে নিজাম হাজারী ২০১৫ সালের আগে সংসদ সদস্য হতে পারেন না। অথচ তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়েছেন।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ৮ জুন বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রুল দেন। ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে নিজাম হাজারী কোন কর্তৃত্ববলে পদে আছেন এবং ওই আসনটি কেন শূন্য ঘোষণা করা হবে না, রুলে জানতে চাওয়া হয়।
২০১৬ সালের ৩ আগস্ট এ রুলের শুনানি শেষে ১৭ আগস্ট সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর পদ থাকবে কি-না সে বিষয়ে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছিল হাইকোর্ট। তবে বিচারিক আদালতের একটি নথি না আসায় রায়ের দিন পিছিয়ে ২৩ আগস্ট ধার্য করা হয়। পরে কয়েক দফা পিছিয়ে ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট।