আমরা নেত্রীকে অনেক সময়ই কাছে পাই নাঃ ইমাম
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিভিন্ন প্রকাশনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানসহ অন্যদের বেশি সময় দেন বলে সহাস্যে অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, আমরা অনেক সময়ই নেত্রীকে কাছে পাই না, আপনারাই (শামসুজ্জামান খান) বেশি সময় নেন’।
রাজধানীর সেগুন বাগিচায় শিল্পকলা একাডেমি মাঠে তিন দিনব্যাপী উন্নয়ন মেলার শেষ দিনে ‘বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন ও আজকের বাংলাদেশ’শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। এইচ টি ইমাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর ‘কারাগারের রোজনামচা’ সম্পর্কে আলোচনা হলো। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি আমার কাছে আরও বেশি ভালো লাগে। অসমাপ্ত আত্মজীবনী তে অনেক কাহিনী আছে, অনেক ঘটনা আছে তার (বঙ্গবন্ধুর) ছোটবেলার। সেটিতেও আমাদের শামসুজ্জামান খান সাহেবের বিশাল অবদান আছে।
এ সময় মঞ্চে বসা বিশেষ অতিথি শামসুজ্জামানের দিকে তাকিয়ে এইচ টি ইমাম বলেন, শামসুজ্জামান সাহেব আরও কিছু লিখছেন নাকি? এখন তো ডায়েরি করছেন। এ সময় হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়েন শামসুজ্জামান খান। এইচ টি ইমাম বলেন, স্পেশাল ব্র্যাঞ্চ থেকে কারাগারে বঙ্গবন্ধুর ওপর যে সব রিপোর্ট হয়েছিল, আরেকটি বিশাল কাজ করছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা, শামসুজ্জামান খান সাহেবসহ আরও কয়েকজন।
‘সেই কারণে আমরা তো অনেক সময় নেত্রীকে কাছেই পাই না। আপনারাই বেশি সময় নেন, ঠিক না?’ বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের উদ্দেশ্যে কথাটি বলেই হেসে ফেলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা। তিনি বলেন, যাই হোক আমাদের জন্য জাতির জন্য বিশাল পাওয়া হবে তৃতীয় বইটি।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা বলেন, বঙ্গবন্ধু সবকিছু মিলিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ গড়ে তুলেছিলেন। এ জাতীয়তাবোধটি যখন শক্তিশালী হয়েছে তখনই আমাদের চেতনা হয়েছে যে আমরা স্বাধীন হতে পারি। তিনি স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন বলেই এ কাজটি করতে পেরেছিলেন।
‘বঙ্গবন্ধু শোষিতের গণতন্ত্রের কথা বলেছেন। তারপরই তিনি বলেছেন ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা। তিনি বারবার বলেছেন ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। তাদের পরিবারের সঙ্গে আমি ঘনিষ্ঠভাবে দেখেছি। তারা সবাই অত্যন্ত পরহেজগার মানুষ, ধর্মভীরু মানুষ- বলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
হোসেন তৌফিক (এইচ টি) ইমাম বলেন, আমি নেত্রী সম্পর্কেও প্রায়ই বলে থাকি যে তিনি ভোররাতে উঠেন। তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েন, কোরআন শরীফ পড়েন, ফজরের নামাজ শেষে একটু বিশ্রাম নিয়ে এরপর দিনের কাজ শুরু করেন। তিনি কতটা শালীনতা বজায় রেখে চলাফেরা করেন, আর কোনো নেত্রীকে আপনারা এরকম দেখেন। অনেকে প্রধানমন্ত্রী অনুসরণ করে অন্যভাবে চলেন। তার মানে একেবারে বোরখায় ঢেকে শুধু চোখ রেখে চলতে হবে তাতো নয়।
তিনি আরও বলেন, শালীনতা বজায় রেখে, ধর্ম পালন করে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলে, সঙ্গে সঙ্গে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেয়া, সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করা এ কঠিন কাজগুলো উনি করছেন যেগুলো তার পিতার কাছ থেকেই পাওয়া। বঙ্গবন্ধুও ছিলেন ওই রকম।
ঢাকার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।