রংপুর রাইডার্স ভক্ত ও সমর্থকদের জন্য দুঃসংবাদ!

রংপুর রাইডার্স ভক্ত ও সমর্থকদের জন্য দুঃসংবাদ, এবারের বিপিএল শেষ থিসারা পেরেরার। এবারের আসরে আট ম্যাচ অংশ নেয়া এ শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার ফিরে গেছেন দেশে। গতকাল (রোববার) চট্টগ্রাম থেকে রাজধানী ঢাকা হয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন থিসারা। এবারের বিপিএলে তাকে বল ও ব্যাট হাতে দেখা যাবে না।

নাহ কোন ইনজুরির সমস্যায় নয়। আবার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পিছু টান থেকেও নয়। ভারতের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার হয়ে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি সিরিজে অংশ নিতেই ফিরে গেছেন থিসারা। শোনা যাচ্ছে এবার ভারতের বিপক্ষে সীমিত ওভারের সিরিজে থিসারাকেই অধিনায়ক করা হচ্ছে। সে কারণেই তার ফিরে যাওয়া।

রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেন, ‘থিসারা পেরেরা চলে গেছেন। আমরা এবারের বিপিএলে আর তার সার্ভিস পাবো না। গতকাল (রোববার) দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।’ রংপুর রাইডার্সের লজিস্টিন ম্যানেজার আহসানুর রহমান মল্লিক রনি জানান, ‘আগামী ২৮ ও ২৯ নভেম্বর শ্রীলঙ্কায় ক্রিকেটারদের ফিটনেস টেস্ট। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের ক্যাম্পে ডাক পাওয়া সব লংকান ক্রিকেটারদের ওই ফিটনেস টেস্টে অংশ গ্রহণ বাধ্যতামূলক। তাই লংকান বোর্ড সবাইকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত খেলার অনুমতি দিয়েছিল। লাসিথ মালিঙ্গা বিশেষ অনুমতি নিয়ে ২৮ নভেম্বর দুপুরে সিলেট সিক্সার্সের সঙ্গে ম্যাচ খেলে চলে যাবেন।’

থিসারা পেরেরা রংপুরের সেরা পারফরমার নন। আলোচিত ও আলোড়িত ক্রিকেটারও নন। এখন রংপুর ভক্ত-সমর্থকদের মধ্য মনি মাশরাফি। ক্রিস গেইল আর ব্রেন্ডন ম্যাককালামের মত দুইজন টি-টোয়েন্টি ফরমাটের সেরা ও সফলতম ব্যাটসম্যান দলে থাকার পরও এ মুহূর্তে রংপুর রাইডার্সের আলোচিত পারফরমারও রংপুর অধিনায়ক। এখন ‘ঝড়ের নাম মাশরাফি।’

গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে চিটাগং ভাইকিংসের সঙ্গে ১৭ বলে ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে জয়ের পথে অনেকদূর এগিয়ে দিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মাশরাফি। কিন্তু তারপরও রংপুর জয়ের বন্দরে পৌঁছে লঙ্কান অলরাউন্ডর থিসারা পেরেরার ব্যাটে। চিটাগং ভাইকিংসের ফাস্ট বোলার তাসকিন আহমেদের করা ম্যাচের শেষ বলে ছক্কা হাকিয়ে রংপুরকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন থিসারা।

শুধু ঐ রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের শেষ ওভারেই সাহসী নাবিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়াই নয়, এর আগে গত ২১ নভেম্বর ঢাকা ডায়নামাইটসের সঙ্গে শেষ ওভারে নির্ধারিত খেলাতেও রংপুর শেষ হাসি হেসেছিল থিসারার বীরোচিত নৈপুণ্যে। সে ম্যাচে থিসারা পেরেরা ছিলেন বোলারের ভূমিকায়। শেষ ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ১০ রানের। ঢাকার ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান মিডল অর্ডার কেইরন পোলার্ড আর পেসার আবু হায়দার রনিকে শেষ দুই বলে বোল্ড করে রংপুরকে ৩ রানের অতিনাটকীয় জয় উপহার দেন এই অলরাউন্ডার।

এবারের বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের হয়ে কোন ফিপটি নেই তার। আবার কোন ম্যাচে চার বা পাঁচ উইকেটও পাননি। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ২৮*। আর বল হাতে সেরা নৈপুন্য ২/২৬। আট ম্যাচে রান করেছেন ৯৫। আর উইকেট পেয়েছেন নয়টি। তারপরও দলের প্রয়োজনে কখনো বল হাতে আবার কোন সময় বোলিংয়ে জ্বলে উঠেছেন থিসারা। তাই রংপুর রাইডার্সের দুটি জয়ের পিছনে তার ছিল কার্যকর ভূমিকা।

এমন এক পারফরমারের অভাব অবশ্যই অনুভব করবে রংপুর। সবচেয়ে বড় কথা, মাশরাফি বাহিনীর ব্যাটিংয়ের নিচের দিকে থিসারা ছিলেন বিশ্বস্ততার প্রতীক। আর বল হাতে ডেড ওভারে সবচেয়ে নির্ভরতা। ক্রিকেটিয় পরিভাষায় যাকে বলে ইউটিলিটি পারফরমার’ এমন এক ক্রিকেটার চলে যাওয়ায় রংপুরের শক্তির ভারসাম্য কমবে অবশ্যই। পরের ম্যাচ গুলোয় থিসারার অভাব অনুভূত হবেই।