যশোরে ১২৭ শিশু হাসপাতালে ভর্তি, দুইজনের মৃত্যু

আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে যশোরে শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছি। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে গত তিনদিনে ঠাণ্ডাজনিত রোগে ১২৭ শিশু ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে দুই শিশুর মৃত্যুও হয়েছে। সীমিত আসনের বিপরীতে অধিক সংখ্যক রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত তিনদিনে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ১২৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের অধিকাংশই ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত অন্তত দুইজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেন নি।

 সরেজমিনে গত বুধবার দুপুরে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, ২৪ শয্যার ওয়ার্ডে ৭০ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। সঙ্গে স্বজনদের উপস্থিতিতে পুরো ওয়ার্ডে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। এখানেই চলছে শিশুদের চিকিৎসা। কেউ কেউ শয্যা পেলেও বেশিরভাগ শিশুকে মেঝেতে অবস্থান নিতে হয়েছে।

যশোরের ঝিকরগাছার দোস্তপুর গ্রামের আতিয়ার রহমান জানান, কয়েকদিন ধরে তার নাতি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ঠাণ্ডা জ্বরে কাহিল হয়ে যাচ্ছে। আজ ডাক্তার রিলিজ দিয়ে দিচ্ছিল। কিন্তু ডাক্তারকে অনুরোধ করেছি আজ রাখার জন্য। এজন্য আজও আছি। বাচ্চাদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি।

শহরের ঘোপ এলাকার আফরোজা খাতুন বলেন, তিনদিন ধরে ছেলেটার জ্বর হয়েছে। সঙ্গে সর্দি কাশিও আছে। শিশু হাসপাতালে নিয়েছিলাম। কিন্ত ওরা রাখেনি। সদরে পাঠিয়ে দিয়েছে।

শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স মুসলিমা খাতুন বলেন, গত কয়েকদিনে ঠাণ্ডা জনিত সর্দি, কাশি, জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ঠাণ্ডাজনিত কারণে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

অপর সিনিয়র স্টাফ নার্স শারমিন আক্তার বলেন, ২৪ শয্যার ওয়ার্ডে ৭০ জনের বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে। চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক একেএম কামরুল ইসলাম বেনু বলেন, হঠাৎ করে আবহাওয়ার পরিবর্তন হওয়ায় ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়েছে। শিশু ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত ওষুধ, অক্সিজেন সরবরাহ আছে। তবে শয্যা সংকটে অনেকের কষ্টে থাকতে হচ্ছে। সেবিকা, চিকিৎসকের কোনো অভাব নেই। দুই একদিনের মধ্যেই পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তবে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত কোনো শিশুর মৃত্যু হয়েছে এমন তথ্য তিনি জানেন না বলে উল্লেখ করেন।