মেসিকে দেখার পরই চাকরি ছেড়ে দিলেন এক ভক্ত!

প্রিয় তারকা খেলোয়াড়দের সঙ্গে দেখা করতে ভক্তরা কত কিছুই না করেন। লিওনেল মেসি-ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো-নেইমারদের সঙ্গে একটু হাত মেলানো বা একটা ছবি তুলতে মাঠের মধ্যেও ঢুকে যায় ভক্তরা। পাগলা ভক্তদের কল্যাণে এমন দৃশ্য মাঝে মাঝেই দেখা যায়। তবে বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন প্রানভোমরা মেসির সঙ্গে দেখা করার জন্য মার্টিন গাল্লি নামের এক ভক্ত যেটা করলেন সেটা রীতিমত অবিশ্বাস্য!

শুধুমাত্র মেসিকে দেখতেই চলতি বছরের জুলাইয়ে আর্জেন্টিনার মার দেল প্লাতা থেকে বার্সেলোনায় পাড়ি জমান মার্টিন। প্রথমে দুই-একটা অস্থায়ী চাকরি করলেও পরে ওয়েটার হিসেবে চাকরি নেন ন্যু ক্যাম্পে। সেখানেই মেসির সঙ্গে দেখা হয়ে যায় তার। স্বপ্নের তারকাকে সামনে পেয়ে যেন হতবিহবল হয়ে পড়েন মার্টিন। তবে দ্রুতই সে অবস্থা সামলে কথা বলেন মেসির সঙ্গে। মেসিও তাকে আপন করে নেন।

মুহূর্তটা ক্যামেরা বন্দী করতে ভোলেননি মার্টিন। তবে স্বপ্নের তারকাকে কাছে পাওয়ার পরপরই চাকরি ছেড়ে দেন সেই আর্জেন্টাইন ভক্ত। ম্যানেজারকে যেয়ে জানান, তার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। মেসির সঙ্গে যে দেখা হয়েছে তার প্রমাণ হিসেবে ছবিও আছে। এখানে আর তার কাজ না করলেও চলবে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘স্পোর্ত’ এর কাছে পুরো ঘটনারই বর্ণনা দিয়েছেন মার্টিন। জানিয়েছেন, ন্যু ক্যাম্পে চাকরি নিয়েছিলেন তিনি শুধুমাত্র মেসিকে দেখার জন্যই।

যদিও ন্যুক্যাম্পে চাকরি পাওয়ার পরও অনেকটা সময়ই অপেক্ষা করতে হয়েছে মার্টিনকে, ‘আমি প্রথম যে দিন স্টেডিয়ামে ঢোকার চেষ্টা করি, ওইদিন নিরাপত্তাকর্মীদের টপকাতে পারিনি। কাজটা যে সহজ হবে না সে দিনই বুঝেছি। তারপরও আমি হাল ছাড়িনি। কারণ আমার উদ্দেশ্যই ছিল মেসিকে দেখা।’ এরপর ইকুয়েডরের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচেও চিঠি লিখে মাঠে ঢোকার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু সেবারও ব্যর্থ হন তিনি।

তবে হাল ছাড়েননি মার্টিন। ভাগ্যদেবীও ছেড়ে যায়নি তাকে। তাইতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে অলিম্পিয়াকসের বিপক্ষে ম্যাচের দিন ন্যু ক্যাম্পের “অ্যাভান্টলোতজা ডি’অনার” এ দায়িত্ব পান তিনি। মার্টিন সঙ্গে সঙ্গে বুঝে ফেলেন তার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আর কিছু সময়ই বাকি! এরপর এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। মার্টিনের ভাষ্যমতে, ‘কাঁপতে কাঁপতে বার্সার ড্রেসিংরুমের সামনে পা রাখলাম। হঠাৎ হাতের মধ্যে থাকা চায়ের ট্রে পড়ে গেল। মনকে শক্ত করে আবার চেষ্টা করলাম। আমি ভাবিনি মেসিকে এত কাছে পাবো। মেসিকে যখন সামনে দেখি, আমি কাঁপছিলাম। কথা মুখে আটকে গিয়েছিল। সত্যিই আমার সামনে লিও। স্বপ্ন নয় তো!’

আর্জেন্টাইন সেই ভক্ত আরও বলেন ‘মাঠে খেলা শুরু হওয়ার যখন আর কিছু সময় বাকি তখন এক এক করে কাতালান ফুটবলাররা মাঠে প্রবেশ করছেন। আমি মেসির জন্য অপেক্ষায় আছি। সবাই মাঠে চলে গেল, কিন্ত মেসি যায়নি। আমি ভাবলাম আজও হলো না। কিন্তু ভাগ্য যে এদিন আমার পক্ষেই ছিল। হঠাৎ সামনে তাকিয়ে দেখি মেসি। হতবিহবল হয়ে গেলাম। তবে ঘোর কাটতেই সবাইকে ঠেলে আমি সোজা মেসির কাছে চলে গেলাম। তার সঙ্গে কথা বললাম। এরপর মেসিকে বললাম, আমাকে একটা ছবি তুলতে দেবে? মেসি বলল, হ্যাঁ। বাকিটা ছিল শুধুই আনন্দ। ততক্ষণে আমি আবার ঘোরের মধ্যে চলে গেছি। মেসিও হাসতে হাসতে মাঠে চলে গেল।’