রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেন সেই সুমি

গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল। এতে সুমি মেধাতালিকায় ১০৩তম হয়েছেন। ৮ নভেম্বরের মধ্যে বিষয় বাছাই করে অনলাইনে ফরম পূরণ করতে হবে।

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সেই সুমি খাতুন সব বাধা অতিক্রম করে অবশেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। পৌরসভার ধানগড়া এলাকায় গতকাল বুধবার সুমির বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে উৎসবের আমেজ। এ সময় সুমি বলেন, ‘খবরটি পাওয়ার পর খুবই আনন্দে আছি। পরিবারের সবাই খুশি।’ সুমি পেছনের সবকিছু ভুলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, বাল্যবিবাহের কারণে তাঁর জীবনে যে ছন্দপতন হয়েছিল, তা যেন আর কারও জীবনে না হয়। পড়ালেখা শেষ করে তিনি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।’

সুমির বাবা আবদুল্লাহ সরকার ও মা আম্বিয়া খাতুন বলেন, ‘মেয়েটি আসলেই মেধাবী। অথচ জেএসসি পরীক্ষায় ‍জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করার পরও নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় মেয়েটির বিয়ে দিই। বিদেশফেরত জামাই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান। সংসার টিকিয়ে রাখতে জামাইয়ের ছোট ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় মেয়েটির। কিন্তু সংসার করা হয়নি। ফলে আবারও স্কুলে যাওয়া শুরু।’

সুমি ধানগড়া মডেল উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৪ দশমিক ৫৬ পেয়ে এসএসসি পাস করে ভর্তি হন সদর ধানগড়া মহিলা কলেজে। ২০১৭ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় তিনি ওই কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে একমাত্র জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা সরকার বলেন, জীবনে অনেক বাধা পেরিয়ে সুমি অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি প্রশংসনীয় ও অন্যদের জন্য অনুকরণীয়।

সুমিকে নিয়ে গত ৩০ জুলাই এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।