বিশ্ব কাপাচ্ছেন দাঁড়িওলা এই নারী মডেল!

যুক্তরাজ্যের শিখ তরুণী হরনাম কাউর। ১১ বছর বয়স থেকেই দাড়ি-গোঁফ গজাতে শুরু করে তার৷ অনেক কথা শুনেছেন সেজন্য। অনেকবার আত্মহত্যার কথাও ভেবেছেন৷ কিন্তু শেষে নিজের শরীর ও রোগকে মেনে নিয়েছেন এই অসমসাহসী নারী৷

সাহসটা হরনামের, কিন্তু নির্মম-নিষ্ঠুর জগতের মুখোমুখি হবার সেই দুঃসাহসী অ্যাডভেঞ্চারে তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ইন্টারনেট৷ দু’বছর আগে প্রকাশিত এক ইউটিউব ভিডিও দেখেন লক্ষ লক্ষ মানুষ৷ সেই ভিডিওতে ২৩ বছরের হরনাম জানিয়েছেন, তাঁকে যারা তাঁর গোঁফদাড়ির জন্য হাস্যাস্পদ বা পর্যুদস্ত করার চেষ্টা করেছে, তাদের তিনি কীভাবে ঠান্ডা করেছেন৷

এগারো মাস আগে হরনাম আরেকটি ভিডিওতে শুনিয়েছেন, তিনি কিভাবে ইন্টারনেটে ‘ট্রল’-এর সামাল দেন৷ এর এক মাস পরেই হরনামকে প্রথম দাড়িওয়ালা মডেল হিসেবে ক্যাটওয়াকে দেখা যায়৷ মজার কথা, ঠিক সে-বছরেই ইউরোভিশন সং কন্টেস্ট জেতেন অস্ট্রিয়ান ড্র্যাগ কুইন কনচিটা ভুয়র্স্ট, নারীর সাজে পুরুষ, যার গালপাট্টার মতো দাড়ি আছে৷

অস্ট্রিয়ান ড্র্যাগ কুইন কনচিটা ভুয়র্স্ট

হরনামের নাম ছড়াতে থাকে৷ তাঁর ছবি ওঠে ব্রিটেনের রক’ন রোল ব্রাইড ম্যাগাজিনে৷ এমনকি চার মাস আগে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এও তাঁর নাম উঠেছে৷ ১১ থেকে ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত যেন নরকবাস করেছেন হরনাম৷ লোকজনের তাকিয়ে থাকা আর মন্তব্য সহ্য করতে না পেরে নিজের জীবনের অন্ত ঘটানোর কথা ভেবেছেন৷

১৬ বছরের হরনামের জীবনে শিখ ধর্ম এক নতুন দিগন্ত খুলে দেয়, নিজের শরীর সম্পর্কে আস্থা এনে দেয়৷ সারা দুনিয়ার নারী ও কিশোরীরা যে ‘বডি কনফিডেন্স’ খুঁজছে, তা আজ এই দাড়ি-গোঁফওয়ালা মহিলাটির৷ পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম নামের রোগ তাঁকে পরাস্ত করতে পারেনি ও তাঁর ভিতরের নারীসত্তাকে এক বিন্দু ছিনিয়ে নিতে পারেনি: এর চাইতে বড় আশা ও আনন্দের কথা আর কী হতে পারে?