আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস আজ

দারিদ্রতার কারণেই সৃষ্টি হয় সামাজিক অপরাধ যা সমাজ বিজ্ঞানীদের ধারণা। দারিদ্রতা মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় অভিশাপ। আর এ অভিশাপ মোচনে ও স্বাবলম্বী জীবন প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের উদ্যোগে প্রতি বছর ১৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক দারিদ্র দূরীকরণ দিবস উদযাপিত হয়ে আসছে।

১৯৯৩ সাল থেকে বিভিন্ন দেশ দিবসটি পালন করে আসছে। ১৯৯২ সালের ২২ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ১৭ অক্টোবরকে দারিদ্র্য বিমোচন দিবসের মর্যাদা দেওয়া হয়। ধারণা করা হয় এইড এর প্রতিষ্ঠালগ্নের পর থেকেই  দারিদ্রপীড়িত মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নিরলস কাজ শুরু হয়। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়।

(এপ্রিল ২০১৬) পরিসংখ্যানে দেখা গেছে পৃথীবিতে প্রায় ৯.৬% লোক লোক দারিদ্র সীমার নিচে বাস করে। এর মধ্যে বাংলাদেশের শতকরা ৪০ ভাগ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করে। বর্তমান বাংলাদেশে এখনো ৪ কোটি লোক দারিদ্র সীমার নিচে বাস করছে। এদের মধ্যে প্রায় ২ কোটি লোক যারা রয়েছে চরম দারিদ্র সীমার মধ্যে। পরিকল্পনা কমিশনের তথ্যে এমনটিই দেখা গেছে।

বাংলাদেশের মানুষ মৌলিক চাহিদার মধ্যে  চিকিৎসা-ব্যয়ের ৬২ শতাংশ নিজেই বহন করে। এই ব্যয় মেটাতে গিয়ে মধ্যবিত্তরা দরিদ্র হয়ে পড়ে। আর যারা দরিদ্র, তারা নিঃস্ব হয়ে যায়। এ দেশে দারিদ্র্যের অন্যতম কারণ স্বাস্থ্য সমস্যা বলে অনেকেই মনে করেন। এই সমস্যা উত্তরণে সহজ পথ খোজা খুবই প্রয়োজন।

তবে বাংলাদেশ এখন আর দরিদ্র দেশ নয়, মধ্যম আয়ের দেশ বলে মনে করেন অনেকেই। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তথা জিডিপি ১ শতাংশ বাড়লে আয় বাড়ে দশমিক ৮ শতাংশ। সেজন্য জিডিপির প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে হবে বলে অভিমত দেন তারা।

একজন ব্যক্তি তার অর্জিত আয় দিয়ে দৈনিক ন্যূনতম ২২শ ক্যালরি পর্যন্ত খাদ্যদ্রব্য গ্রহণের সামর্থ্য থাকলে তাকে দারিদ্র্যমুক্ত বলা হয়। এর কম খাদ্য খেলে দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করে বলে ধরা হয়। একই সঙ্গে ১৮শ ক্যালরির কম হলে অতি দরিদ্রের তালিকায় বিবেচনা করা হয়।

 নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কতিপয় সামাজিক সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনা। বিশেষ করে নব্বই দশকের পর থেকে দারিদ্র্য বিমোচনে অন্যান্য সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ।