অসাধ্যসাধন ৯৭ বছর বয়সে ‘বিশ্ব রেকর্ড’

আয়ুর দৌড়ে শতবর্ষ তিনি ছুঁতে পারেননি বটে, তবে ১০০ মিটার দৌড়ে ঠিকই ‘বিশ্ব রেকর্ড’ গড়েছেন! এই অসাধ্যসাধন করেন ৯৭ বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক চার্লস এগুস্টার। ৯৫ থেকে ১০০ বছর বয়সী ব্যক্তিদের দৌড় প্রতিযোগিতায় তিনি এই রেকর্ড গড়েছিলেন। 

‘গড়েছিলেন’ বলার কারণ চার্লস বেঁচে নেই। গত ২৬ এপ্রিল তিনি পরলোকে পাড়ি জমিয়েছেন। মৃত্যুর আগে অবশ্য তিনি প্রমাণ করে গেছেন, বয়স মানুষের জন্য একটা সংখ্যা মাত্র। চার্লসের জন্ম ১৯১৯ সালে। পেশায় ছিলেন দাঁতের চিকিৎসক। সারাটা জীবন পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি দারুণ আসক্ত ছিলেন। অ্যাথলেটিকস খুব ভালো লাগত। নিয়মিত রোয়িং করতেন। ৬৩ বছর বয়সে এসে তাঁর মনে হলো তিনি যেন বেশি বুড়িয়ে যাচ্ছেন। তখন থেকেই টুকটাক শরীরচর্চার শুরু। মধ্য আশিতে তিনি হয়ে ওঠেন একজন বডি বিল্ডার। বয়সটা নব্বই পার হওয়ার পর চার্লসের মনে হলো, একজন স্বল্পপাল্লার দৌড়বিদ হওয়ার প্রতিভা ও ক্ষমতা দুটিই তাঁর আছে।

যেই ভাবা সেই কাজ। একজন কোচ রাখলেন। ইচ্ছা প্রকাশ করলেন বিশ্ব মাস্টার্স প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার। বিবিসি তাঁর জীবদ্দশায় তাঁকে নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি বানিয়েছিল। তাতে তিনি তাঁর এই দৌড়বিদ হওয়ার কারণটি বলেছিলেন, ‘আমি ৯৫ বছর বয়সে দৌড় শুরু করি। যেকোনো বয়সেই নতুন কিছু শুরু করা যায়। ৯৭ বছর বয়সে এসে আমার মনে হচ্ছে, আমি কত কম জানি।’

ফ্রান্সে ৯৫ থেকে ১০০ বছর বয়সীদের দৌড় প্রতিযোগিতায় গিয়েই বাজিমাত করলেন চার্লস। বিশ্ব রেকর্ড গড়ে চারদিকে হইচই ফেলে দিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি লং জাম্পেও বিশ্ব রেকর্ড গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। একমাত্র প্রতিযোগী হিসেবে লং জাম্পে লাফিয়েছিলেন ১.১৭ মিটার। ২.২৫ মিটার লাফালেই বিশ্ব রেকর্ড ছুঁতে পারতেন।

পরিপূর্ণ এক জীবনই যাপন করে গেছেন চার্লস। মৃত্যুর আগে প্রেমে পড়েছিলেন ৭৯ বছর বয়সী বৃদ্ধা ক্যারোলিনের। অনাবিল আনন্দের মধ্য দিয়েই কেটেছে জীবনের শেষ কয়েকটি দিন। প্রেমের ব্যাপারে তাঁর মন্তব্য ছিল, ‘আমি মনে করি, প্রেমে পড়ার কোনো বয়স নেই। প্রেমের ক্ষেত্রে কেউই বৃদ্ধ নয়।’
চার্লস চিরতরুণ থেকেই ছেড়েছেন এই পৃথিবী। এমন সৌভাগ্য কয়জনেরই–বা হয়!

https://youtu.be/9frumu9Wl4M