‘শুল্কহার কমিয়ে দিলেই বন্ডের পণ্য খোলাবাজারে যাবে না’
প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি-বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান বন্ড সুবিধার অপব্যবহার বন্ধের টোটকা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বন্ড সুবিধার আওতায় যেসব কাপড় আসে সেগুলো হয় আমদানি নিষিদ্ধ কিংবা শুল্কহার উচ্চ। সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে ও শুল্কহার কমিয়ে দিলেই বন্ডের পণ্য আর খোলাবাজারে যাবে না। তখন বন্ড সুবিধায় পণ্য এনে সেসব দিয়ে রপ্তানিতে মনোযোগ হবেন উদ্যোক্তারা। সেমিনারটির আয়োজন করে বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)। এতে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি আবদুল কাদের খান। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সমিতির সাবেক সভাপতি রাফেজ আলম চৌধুরী।
রাফেজ আলম চৌধুরী বলেন, গত অর্থবছর সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ পণ্যের প্রচ্ছন্ন রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬৭০ কোটি ডলার। আর সরাসরি রপ্তানি হয়েছে ১১২ কোটি ডলারের সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ পণ্য। পশ্চাৎমুখী খাতটির জন্যই তৈরি পোশাক রপ্তানি আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে। পোশাকের লিড টাইম (ক্রয় আদেশ পাওয়া থেকে পণ্য জাহাজিকরণের সময়) কমে এসেছে। পোশাক খাতের ব্যবহৃত ৯৫ শতাংশ সরঞ্জাম ও মোড়ক পণ্য দেশীয় কারখানাগুলোই জোগান দেয়।
সরঞ্জাম ও মোড়ক পণ্য খাতের জন্য নগদ সহায়তা ও করপোরেট কর হ্রাস করার দাবি জানান রাফেজ আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, সরঞ্জাম ও মোড়ক পণ্য খাতটি এগোতে না পারলে পোশাক খাতের ৫ হাজার কোটি ডলার রপ্তানি আয় সম্ভব না। সম্ভাবনাময় এই খাতের দাবি বাস্তবায়নে অনেকে আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
রাফেজ আলম চৌধুরীর বক্তব্যের সূত্র ধরে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, কোনো ব্যবসায়িক সংগঠনের কতজন সাংসদ (এমপি) তার ওপর তাদের দাবি-দাওয়া আদায় নির্ভর করে। পোশাক খাতের মালিকদের মধ্যে ৩৫ জন সাংসদ আছেন। সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ পণ্য খাতে আছেন মাত্র দুজন। তবে তাঁরাও আবার খুব একটা সক্রিয় নন। নাজনীন আহমেদ ও খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম উভয়েরই বলেন, পোশাকের পর দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানি খাত হচ্ছে চামড়া। সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ পণ্যের রপ্তানি আয় চামড়ার প্রায় কাছাকাছি। তাই চামড়া খাত নগদ সহায়তা পেলে সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ পণ্য খাত কেন পাবে না?
আরও বক্তব্য দেন বাণিজ্যসচিব শুভাশীষ বসু, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য, এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদ, বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ।
এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘প্রচুর টাকা পড়ে থাকার পরও চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য চারটির বেশি গ্যাংট্রিক ক্র্যান কিনতে পারলাম না। ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার জন্য সারা দেশ ও দেশের অর্থনীতি ভুগছে।’