আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী নির্বাচন যেন অবাধ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় সে চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক, এটাই আমি চাই। কারণ ভোট জনগণের সাংবিধানিক অধিকার।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নিরপেক্ষ ভোটের দাবিতে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হয়েছে। অনেক রক্ত ও জীবন চলে গেছে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কোন কোন পদক্ষেপ গ্রহণযোগ্য হবে, সেসব বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে। কেননা গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করা, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
জনগণের মৌলিক অধিকার ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে যা যা দরকার তা করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কয়েকটি স্থানীয় ও উপনির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই নির্বাচনে বিএনপির কয়েকজন প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। জনগণ যাকে খুশি ভোট দিতে পারবে। আমরা তাতে বাধা দিইনি। নির্বাচন কমিশন সব দলের সঙ্গে আলোচনা করবে। আমরা সবার মতামত চাইব। গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করতে যা যা করণীয় তা ঠিক করা হবে।
বিএনপির আমলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্কের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য প্রধান বিচারপতি কেএম হাসানের বয়স জালিয়াতি করে বাড়ানো হয়েছিল। স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রিপরিষদে স্থান দিয়েছিল। তারা খুনি, দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপিদের সুযোগ দিয়েছিল। ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি করেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করার পর জনগণের ভোটাধিকার অর্জন করেছে এবং জবাবদিহিতার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, রাজনীতি নিজের জন্য নয়, রাজনীতি করি মানুষের জন্য। ২০১৪ সালে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারিনি। আমি নিজে খালেদা জিয়াকে ফোন করেছি। তাকে বলেছিলাম সর্বদলীয় সরকার করে নির্বাচন করি। যে মন্ত্রণালয় চাইবেন সেটাই দেয়া হবে। তার পরও তিনি নির্বাচনে না এসে আগুন দিয়ে ও পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যার পথ বেছে নিলেন। পরে জনগণ তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।
আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় আসায় বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বর্তমান সরকারের অধীনে দেশে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে। দেশে গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত হয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন সেক্টরে উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো।
তিনি বলেন, ’৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে সরকার নির্বাচন সুষ্ঠু ও জবাবদিহি করে। ভোট ও ভাতের অধিকার আন্দোলন করে আনা হয়। আমাদের স্লোগান ছিল— ‘আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেবো’। ২০০১ সালে নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছিল। আমাদের নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারত না। এ রকম খেলা খেলেছিল বিএনপি।
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভোটাধিকার পৃথিবীর সভ্য দেশে রয়েছে। কিছু কিছু পরীক্ষামূলক আয়োজন করা হয়েছে। মানুষ তার ভোটের অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার স্বাধীনভাবে ও নিরপেক্ষভাবে প্রয়োগ করতে পারবে, সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।