মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ

সড়কপথে যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হওয়ার পাশাপাশি কাছেই বন্দর সুবিধা থাকায় দেশি-বিদেশি শিল্পোদ্যোক্তাদের চোখ এখন চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের দিকে। বিনিয়োগের পূর্বশর্ত বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা। দেশি-বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, মিরসরাইয়ে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে এক হাজার ১৩৬ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জোগান দেওয়া হবে ৯১৪ কোটি টাকা। বাকি টাকা আরপিসিএল পাওয়ার জোন লিমিটেডের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের ব্যবস্থা করতে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা  জানিয়েছেন, প্রকল্পের উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়েছে, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া। প্রকল্পটি শিগগিরই একনেক সভায় অনুমোদন পাওয়ার কথা রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র  নির্মাণের পাশাপাশি সেখানে ১১/২৩০ কেভি সুইচওয়ার্ড নির্মাণ করা হবে। মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে এখন পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে চলছে।

প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে এরই মধ্যে বড় আকারের বিনিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ, পিএইচপি, এসিআই, বিএসআরএম, মেঘনা, আমান গ্রুপসহ দেশের অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান। বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারত, চীন, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে। বিনিয়োগের পূর্বশর্ত বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা। দেশি-বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভেতরে ১৫০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র  নির্মাণের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে এ বছরের মধ্যেই। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হবে ডুয়াল ফুয়েল বা গ্যাস ও ফার্নেস অয়েলে। ২০১৯ সালের মধ্যেই বিদ্যুৎকেন্দ্র  নির্মাণের কাজ শেষ করতে চায় বাস্তবায়নকারী সংস্থা রুরাল পাওয়ার কম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল) ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।

আরপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সবুর বলেন, ‘দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে বেজা থেকে আমাদের অনুরোধ করা হয়েছিল। তাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সেখানে প্রাথমিকভাবে ১৫০ মেগাওয়াটের ডুয়াল ফুয়েল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছি। পরবর্তী সময় চাহিদার আলোকে সেখানে ৫০০ মেগাওয়াট হতে পারে। এরই মধ্যে বেজা থেকে আমাদের ১৬ একর জমি লিজ দেওয়া হয়েছে। যেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হবে।’

বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের জোগান কোথা থেকে আসবে এমন প্রশ্নে রুরাল পাওয়ার কম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি থেকে গ্যাস আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে পাইপলাইন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আরপিসিএলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রে ডিজেল ব্যবহার করা হবে ফার্নেস অয়েল।

আবদুস সবুর বলেন, ‘বেজাকে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি কাজ শুরুর পর থেকে ১৫ মাসের মধ্যে বিদ্যুেকন্দ্রের নির্মাণের কাজ শেষ হবে।’