চাল-আটার দাম বাড়ায় কষ্টে আছে নিম্ন আয়ের মানুষেরা

চাল, আটার দাম বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর নিম্ন আয়ের মানুষেরা কষ্টে আছে। এর প্রভাবও বহুমাত্রিক। রিকশাচালকেরা এখন বেশি ভাড়া চাইছেন, হোটেলগুলোতে ভাতের দাম বেড়েছে, খণ্ডকালীন গৃহকর্মীরা বেশি বেতন দাবি করছেন, শ্রমিকদের আয়ে পোষাচ্ছে না। সব মিলিয়ে প্রভাব পড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়ে। মূল্যস্ফীতির চাপ বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে, জুলাইতে মাসওয়ারি মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ হয়েছে। কিন্তু চালের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ঈদুল আজহার পরে। সঙ্গে কেজিপ্রতি ৪ টাকা বেড়েছে খোলা আটার দামও। এ ছাড়া বাজারে এখন ব্যাপক চড়া সবজির দাম। পেঁয়াজের ঝাঁজও বেশি। ডাল, ভোজ্যতেল, রসুন, লবণ ইত্যাদি পণ্যের দাম নতুন করে বাড়েনি। তবে আগে থেকেই বেশ চড়া, যা নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর চাপ তৈরি করছে।

রাজধানীর বিজয় সরণি থেকে তেজগাঁও যাওয়ার ওভারপাসের নিচের রেললাইনের পাশে সামান্য দূরেই একটি বাজার। বাজারটির ক্রেতারা ওই এলাকার একেবারেই নিম্ন আয়ের মানুষ। এ বাজারে কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা গেল, মোটা চালের সর্বনিম্ন দাম কেজিপ্রতি ৫০ টাকা। মাঝারি মানের বিভিন্ন চাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে কেজিপ্রতি ৫৬ থেকে ৬০ টাকা দরে। আর মিনিকেট চালের কেজি ৬৫ টাকা। সবজির মান একটু ভালো হলেই কেজি ৫০ টাকার ওপরে। এক আঁটি শাকের দাম ১৫ টাকা।

স্থানীয় দোকানমালিক মো. পলিন বলেন, মোটা চালের দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকার মতো কমেছে। ভারতীয় মোটা চাল তিনি কেজিপ্রতি ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। তবে কমার পরিমাণ বৃদ্ধির হারের চেয়ে অনেক কম। এক বছর আগে এ চালের কেজিই ২৮ থেকে ৩০ টাকা ছিল বলে জানান ওই বিক্রেতা।

বাজারটির মুদি দোকানগুলোতে ছোট ছোট ঠোঙায় চিনি, গুঁড়া মসলা, ডাল, রসুন ইত্যাদি পণ্য রেখে দেওয়া। কখনো শিশুরা, কখনো তাদের অভিভাবকেরা ১০ টাকা পাশে রেখেই একেকটি ঠোঙা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। কোনো দর-কষাকষি নেই। বিক্রেতারা জানান, এসব দোকানের বেশির ভাগ ক্রেতাই কম পরিমাণে কেনেন। ফলে তাঁদের দামও দিতে হয় বেশি।

মো. পলিনের দোকানে ১৩০ গ্রাম ওজনের এক ঠোঙা চিনির দাম ১০ টাকা, এতে কেজি পড়ছে প্রায় ৭৭ টাকা। কিন্তু কারওয়ান বাজারের খুচরা দোকানে চিনির কেজি ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। জানতে চাইলে মো. পলিন বলেন, বেশি পরিমাণে কিনলে তিনিও কেজিপ্রতি ৬০ টাকা দরে বিক্রি করেন। কম পরিমাণে বিক্রিতে ঘাটতি হয়, পলিথিনের দাম বাবদ খরচ হয়, ছোট প্যাকেট করতে শ্রম বেশি দিতে। তিনি বলেন, গরিব মানুষ কম পরিমাণে কেনে, তাই দাম বেশি পড়ে। এতে বিক্রেতার লাভ।