নারীদের পরীক্ষা করে যৌন নির্যাতনের আলামত পেয়েছেন জাতিসংঘ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা লোকজনের মধ্যে অনেক নারী ধর্ষণ এবং অন্যান্য নানা ধরনের যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। নারীদের পরীক্ষা করে বহু নারীর দেহেই ধর্ষণসহ ভয়াবহ যৌন নির্যাতনের আলামত পেয়েছেন জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আসা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।

শারীরিক পরীক্ষা থেকে পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে মেডিকরা জানান, ওই রোহিঙ্গা নারীদের দেহে বারবার যৌন নির্যাতনে সৃষ্ট আঘাত ও ক্ষত পাওয়া গেছে। সেখান থেকে তারা সিদ্ধান্তে এসেছেন, ওই নারীরা যৌন হয়রানি থেকে শুরু করে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকারও হয়েছে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রায় ৪ লাখ ২৯ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন চিকিৎসক দল থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করেছে রয়টার্স। এতে দেখা গেছে, যৌন হয়রানি থেকে শুরু করে গণধর্ষণেরও শিকার হয়েছেন রোহিঙ্গা নারীরা। এসব যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করে, সেনাবাহিনীকে বদনাম করতেই এই মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।

মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি’র মুখপাত্র জও হ’তে বলেন, এ ধরণের যে অভিযোগই তাদের কাছে আনা হবে কর্তৃপক্ষ সে ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্ত চালাবে। ধর্ষণের শিকার নারীদের উচিত আমাদের শরণাপন্ন হওয়া। আমরা তাদের পূর্ণ নিরাপত্তা দেবো। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো, বলেন তিনি।

কক্সবাজারে আটজন স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাকর্মীর সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। তাঁরা দাবি করেছেন, আগস্ট মাস থেকে ধর্ষণের শিকার মোট ২৫ জন নারীর চিকিৎসা করেছেন। ওই চিকিৎসকেরা বলছেন, নির্যাতনের শিকার নারীরা বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যরা এর জন্য দায়ী।

লেদায় জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) চালানো একটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সমন্বয়ক নিরন্ত কুমার বলেন, রোহিঙ্গা নারীদের ওপর ‘আগ্রাসী হামলা’ চালানো হয়েছে। রোগীদের পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলা হয়, অনেক নারীর ওপর ‘অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন’ চালানো হয়েছে।