রোহিঙ্গাদের জন্য ৫৩ টন ত্রাণসামগ্রী দিল ভারত
মিয়ানমারে বিপর্যয়ের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য প্রথম দফায় ৫৩ মেট্রিক টন ত্রাণ পাঠিয়েছে ভারত সরকার। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমান ‘সি-১৭’ করে এসব ত্রাণ এসে পৌঁছায়।
বিমানবন্দরের রানওয়েতে বাংলাদেশের পক্ষে ত্রাণগুলো সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মাসুকুর রহমান শিকদার, বিমানবন্দর ম্যানেজার উয়িং কমান্ডার রিয়াজুল কবির প্রমুখ।
‘অপারেশন ইনসানিয়াত’ নামে প্রথম দফার এ ত্রাণ সহায়তায় আছে- চাল, ডাল, বিস্কুট, নুডলস, লবণ, চিনি, সাবান, মশারি ও গুঁড়ো দুধসহ বিভিন্ন পণ্য। রোহিঙ্গাদের জন্য পাঠানো ত্রাণে বিভিন্ন পণ্য দিয়ে ১৫ কেজি করে প্যাকেট করা হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে সাত হাজার টন ত্রাণ পাঠানো হবে। শিগগির এসব ত্রাণসামগ্রী কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
ত্রাণ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ভারত বাংলাদেশের দুঃসময়ের বন্ধু। যেকোন প্রাকৃতিক-মানবিক বিপর্যয়ে ভারত বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পাশে ছিল। ৭১’ সালে মানবিক বিপর্যয়ের সময়ও ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল। এখন মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশ যে মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছে এ সময়ও ভারত আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এভাবে পাশে থাকার জন্য আমরা ভারত সরকারের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি। ’
ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘বিপুল সংখ্যক এই শরণার্থীর ভার বহন করা বাংলাদেশের জন্য নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ সরকার এ বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের জন্য সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। এটা প্রশংসনীয়। ভারত সরকার বাংলাদেশের মানবিক প্রচেষ্টার সমর্থন করতে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি মহতী উদ্যোগ। ভারত বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে পাশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা এসেছে। বাংলাদেশের মতো বহুল জনসংখ্যার দেশে রোহিঙ্গাদের খাদ্য ও বস্ত্র যোগান দেওয়া বড় চ্যালেঞ্জ। বিষয়টি অনুধাবন করে ভারত ৭ হাজার টন ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে। টানা ৪৮ ঘণ্টা কাজ করে ৫৩ টন পাঠানো হয়েছে। বাকিগুলো ভারতের বিশাখা পত্তম বন্দর থেকে জাহাজে এবং বিমানে করে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চট্টগ্রাম আসবে।
মরক্কোর ১৪ টন ত্রাণ
বৃহস্পতিবার সকালে মরক্কোর ১৪ টন ত্রাণসামগ্রী বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে। ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে ছিল ৭০ পিস তাঁবু, ১ হাজার পিস কম্বল, ৫০০ পিস ওষুধ, গুঁড়ো দুধ ২ টন, টেট্রেস ১ টন এবং ৪ টন চাল। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) হাবিবুর রহমান এ সব ত্রাণসামগ্রী গ্রহণ করেন। এ সময় উপস্তিত ছিলেন মরক্কোর অ্যাম্বাসেডর মো. মজিদ হালিম, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়া রোহিঙ্গাদের জন্য ১২ টন ত্রাণ পাঠিয়েছিল।