সীমান্তের জিরো পয়েন্টে ঠাই নিচ্ছে অসংখ্য রোহিঙ্গা
বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় সীমান্তের জিরো পয়েন্টে (নোম্যান্সল্যান্ড) আবারও জড়ো হচ্ছে চরম বর্বরতা ও নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা অসংখ্য মুসলিম রোহিঙ্গা। কিন্তু সীমান্তে কড়াকড়ি থাকায় তারা সহজেই বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারছেন না। এর ফলে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আজ বুধবার বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে দেখা গেছে অসহায় রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রার এই দৃশ্য। জানা যায়, কড়াকড়ির কারণে সীমান্তের ‘জিরো পয়েন্টে’ রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়ছেই। অনাহারী-অর্ধাহারী ওই মানুষগুলো খোলা আকাশের নিচে এখন মানবেতর জীবন পার করছেন।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র সোসেফ ত্রিপুরা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে আরও ৯ হাজার রোহিঙ্গা। এদিকে গত সোমবার শরণার্থী সংস্থাটির পক্ষ থেকে সর্বশেষ সহিংসতায় ৩ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে জানানো হয়। পরদিন মঙ্গলবার আরও ৫৭ হাজার রোহিঙ্গার প্রবেশ কথা জানায় সংস্থাটি। সব মিলিয়ে ২৫ আগস্টের পর থেকে ৩ লাখ ৭৯ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা জানান, তাদের স্বজনদের কেউ মিয়ানমারের সেনাদের হাতে,কেউ নৌকা ডুবিতে প্রাণ হারিয়েছেন। আবার কেউ কেউ জঙ্গল ও পাহাড়ে হারিয়ে গেছেন। কারও কারও লাশ মিলেছে, কারও মেলেনি। উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট ভোররাত থেকে রাখাইনে সীমান্তরক্ষী পুলিশের সঙ্গে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যদের সংঘাত শুরু হয়। এতে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হন। এর মধ্যে ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বাকিরা আনসার সদস্য ছিল। এ ঘটনার পর মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী বিতাড়ন অভিযান শুরু করে।
এদিকে গত কয়েক দশক ধরে ঠান্ডা মাথায় মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার ও সুচি সরকারের সুপরিকল্পিতভাবে নীরব ‘জেনোসাইডের’ অন্তরালে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান নিহত হয়েছে, পালিয়ে বাঁচার সময় সাগরে ডুবে মারা গেছে। সুচি সরকার ক্ষমতায় আসার আগেই ভোটাধিকার ও নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের রাষ্ট্রবিহীন জাতিতে পরিণত করা হয়েছে।