‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকারকে সহযোগিতা করবে বিএনপি’

রোহিঙ্গা ইস্যুর সমাধানে মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করতে ‘সক্রিয় কূটনৈতিক তৎপরতা’ গ্রহণের দাবি জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধী দলের চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, সরকারপ্রধান আমাদের আহ্বানে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আমরা সরকারকে সহযোগিতা করবো।

বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যা বন্ধ, মানবতাবিরোধী অপরাধী মিয়ানমারের পণ্য বর্জনের দাবি’-তে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগরের এক প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের খাদ্য, নিরাপত্তা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। একই সঙ্গে সক্রিয় কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করা হোক এই রোহিঙ্গাদেরকে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে- এটা আমাদের দাবি। তিনি আরও বলেন, ওরা হিন্দু না মুসলিম- এটা জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন নেই, ওরা মানুষ। সেই মানবতার বিরুদ্ধে আজকে মিয়ানমার সরকার যুদ্ধ শুরু করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আসুন আমরা আজকে জনমত সংগঠিত করে বিরুদ্ধে সোচ্চার হই তারা যেন এই গণহত্যা বন্ধ করে, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

ন্যাপ ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক সৈয়দ শাহজাহান সাজু’র সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা ও বিএনপির সহ-তথ্য গবেষণা সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।

জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, সরকারপ্রধানকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাধুবাদ জানানোর পরই সরকারের উচিত ছিল দ্রুত সকল দলের সমন্বয়ে গোলটেবিল বৈঠকের আহ্বান করা। দেশের স্বার্থে গণতন্ত্রের স্বার্থে সরকারের উচিত সর্বদলীয় আলোচনার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলা করা।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া মিয়নমারকে মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসাবে আখ্যায়িত করে দেশবাসীকে মিয়ানমারের সকল পণ্য বর্জন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধী মিয়ানমারের চাল আনবেন না। পৃথিবীর অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে চাল আমদানি করুন। মিয়ানমারের সাথে সম্পাদিত চাল আমদানি চুক্তি বাতিল করুন।

তিনি বলেন, কোথায় আজ বিশ্ব মুসলমানদের সহযোগিতা ও ভ্রাতৃত্বের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত সংস্থা ওআইসি। নীরব কেন আজ মানবাধিকার সংস্থা? নিশ্চুপ কেন জাতিসংঘ?। গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে এবং বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এভাবে তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। নিজ দেশে থাকতে না পেরে তারা বাঁচার আশায় থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় সমুদ্র পথে নৌযানে পাড়ি জমাচ্ছে। নৌযান ডুবে তারা সাগরের পানিতে ভাসছে ও ডুবে মরছে। সাগরে ভাসতে ভাসতে শুধু রোহিঙ্গা মুসলমান মরছে না, মানবতারও মৃত্যু হচ্ছে। তাদের বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসা সকলের মানবিক দায়িত্ব।

সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ শাহজাহান সাজু বলেছেন, রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যা জাতিসংঘের ভূমিকা খুবই দুঃখজনক। প্রতিনিয়ত মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের রক্তপাত ঘটেই চলেছে। অথচ আন্তর্জাতিকভাবে সু চি সরকারকে চাপ প্রদান করা হচ্ছে না।