কুড়িগ্রামের বন্যার্তদের পাশে ‘ওয়ার্কস ফর হিউমানিটি’

‘প্রাণের জন্য ত্রাণ’ এ বাক্যকে ধারণ করে কুড়িগ্রামের ৬০০ বন্যার্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে ঢাকাস্থ স্বেচ্ছাসেবী ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘ওয়ার্কস ফর হিউমানিটি’ (ডব্লিউএফএইচ)। শুক্রবার দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলার রৌমারী উপজেলার খেরুয়ার চর গ্রামে এ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

বিতরণ করা ত্রাণ সামগ্রীর প্রতিটি প্যাকেটে চিড়া, গুর, মুড়ি, বিস্কুট, লবণ, খাওয়ার স্যালাইন, ফিটকিরি, মোম, ম্যাচ এবং সাবান ছিল। এছাড়াও প্রতিটি প্যাকেটে ঔষধ হিসেবে প্যারাসিটামল, এন্টিহিস্টামিন এবং মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট ছিল। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিষ্ঠানটির ফাউন্ডার ও চেয়ারপার্সন তাহমিনা তৃষার নেতৃত্বে ত্রাণ বিতরণের ১৩ সদস্যের একটি দল ঢাকা থেকে রওয়ানা হয়ে শুক্রবার দুপুরে রৌমারীতে পৌছে। ত্রাণ বিতরণকারী দলে প্রতিষ্ঠানটির কো-ফাউন্ডার মেসবাহ মুন্না, জেনারেল সেক্রেটারি ও সচেতনতা বিভাগ প্রধান সৌরভ শেখ, স্বাস্থ্য ও রক্ত বিভাগ প্রধান ফয়সাল হোসেন নূরুল ইসলাম, শিক্ষা বিভাগ প্রধান সুজন পাটোয়ারি, স্বাস্থ্য ও রক্ত বিভাগ সহকারী প্রধান আহাম্মেদ কবির সোহেল, সদস্য মেহেদি রেজা শাওন, ফিরোজ আহমেদ, মাহমুদ রাফি, শাহানাজ খান মনি, মোঃ আরিফ, নাইমুর রহমান এবং অনন্যা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

ওয়ার্কস ফর হিউমানিটি’র (ডব্লিউএফএইচ) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপার্সন তাহমিনা তৃষা জানান, ‘আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের সুযোগ পাইনি, তাদের জন্য দেশের মানুষের বিপদে দাঁড়াতে পারাটা একটা সুযোগ ও সৌভাগ্যের ব্যপার। আমার দেশের মানুষ বন্যায় মারা যাবে, না খেয়ে থাকবে, আর আমরা তরুণ প্রজন্ম শুধু রিমোট ঘুরিয়ে নিউজই দেখব এখনি এত খারাপ দিন আমাদের দেশে আসেনি। আমি শুধু ওয়ার্কস ফর হিউম্যানিটির ভলান্টিয়ারদের কথা বলব না, বরং যারা এই বিপদে এগিয়ে এসেছেন তাদের সবার কথা বলতে চাই। কেন যেন আমরা নেগেটিভিটিটাই বেশি দেখি। অথচ পথশিশুটাও ২টাকা দিয়ে এগিয়ে এসেছে আবার অনেক নায়ক, অনলাইন এক্টিভিস্টরাও এগিয়ে এসেছেন।

যেখানেই যাই, দেখি বক্স হাতে বন্যার্তদের জন্য কালেকশান করছে সকল বয়সি সকল পেশার মানুষেরা। হয়ত অনেকেই শুধু হা হুতাশ করেছে, কিন্তু আমার মনেহয় সেই সংখ্যাটা খুবই কম। আসলে আমাদের মধ্যে দেশপ্রেম, মনুষ্যত্ব এখনো প্রবল; শুধু সেটার সুষ্ঠু প্রয়োগের অভাব। এবার বন্যাতেই যত ওরগানাইজেশান, যত সেলিব্রেটি, যত প্রশাসনীয় ব্যক্তি ত্রাণ দিয়েছে, পরিমাণটা কিন্তু অনেক। তবুও কেন যেন এখনো কেউ কেউ কিছুই পায়নি, আবার কেউ কয়েকবার পাচ্ছে। যদি এগুলো প্রোপার প্ল্যানিং করে মেইন্টেইন করা যায়, তাহলে দেশের মানুষ ও দেশ যথাযথভাবে উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি।”

উল্লেখ্য, ডব্লিউএফএইচ ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকাধীন জিগাতলা এলায় প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। আর্তমানবতার সেবায় নিরক্ষরতা দূরীকরণ এবং স্বেচ্ছায় রক্তদানসহ সমাজ উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মকান্ডে প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

মোঃ মনিরুজ্জামান, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি