বিলাসবহুল গাড়ি ছেড়ে রাস্তায় ছদ্মবেশে পৌর মেয়র!

যাকে বহন করার জন্য রয়েছে একটি পাজোরোসহ দুইটা অত্যাধূনিক বিলাসবহুল গাড়ি, তিনি কিনা পায়ে হেঁটে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন। তাও আবার ছদ্মবেশে। ঘটনাটি অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। এমনটাই করেছেন চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু। টানা ৭ দিন তিনি কখনো কৃষক, কখনো রিকশা চালক আবার কখনো আবার সাধারণ শ্রমিক বেশে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন পৌর এলাকার পাড়া মহল্লাতে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা সমালোচনা।

এ ব্যাপারে ছদ্মবেশ ধারণকারী মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু জানান, তার শহরে ২৫ কোটি টাকার উন্নয়নের প্রকল্প শুরু হয়েছে সম্প্রতি। কিন্তু ঠিকাদারদের দিয়ে কাজ করাতে গিয়ে বারবার তিনি ঠকেছেন, ঠকেছে শহরের মানুষ। উন্নয়ন কাজ করাতে গিয়ে ঠিকাদাররাই দুর্নীতি করে টাকা খেয়ে ফেলে। কাজ যতটুকু হয় তার মান খুবই জঘন্য। অল্প দিনের মধ্যেই আবার সংস্কারের কাজ শুরু করতে হয়। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে তিনি এবার নিজেই মাঠে নেমেছেন চুরি ঠেকাতে।

সোমবার সকাল ১০টায় তিনি একজন সাধারণ শ্রমিক বেশে মহিলা কলেজ পাড়া, বুজরুকগড়গড়ি, রজনীগন্ধা সড়ক ও হাজরাহাটি গ্রামে পৌরসভার উন্নয়ন কাজ তদারকি করেন পৌর মেয়র। এদিকে মেয়রের এমন উদ্যোগে অন্য রকম আলোড়ন তুলেছে এলাকায়। এলাকাবাসী বলছেন, মেয়র জিপুর মতো মানুষের হাতে শহরের উন্নয়নের দায়ভার অনেকটা আশীর্বাদ হয়েছে তাদের জন্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও যথেষ্ট আলোড়ন তুলেছে ঘটনাটি। তারা আরো বলেন, চুয়াডাঙ্গার মেয়রের কাছ থেকে জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের অনেক কিছু শেখার আছে।

তিনি বলেন, ‘প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হওয়ার পর সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায়। ইউজিপি-৩ প্রকল্পের এই উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও সড়কবাতি উন্নয়নের কাজ, যা গত ২৫ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ কোটি টাকার বরাদ্দ রয়েছে এসব কাজের জন্য। ‘

মেয়র জিপু আরো বলেন, ‘কাজ শুরুর পর ঠিকাদাররা যাতে কোনোভাবেই কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতি করতে না পারে তার জন্যই ছদ্মবেশে ঘুরছি। কখনো কৃষক, কখনো রিকশাচালক ও কখনো সাধারণ শ্রমিকের বেশে হাজির হয়েছি সাইটে। কাছ থেকে দেখার জন্য যে কোথায় কে কীভাবে চুরি করে।’