হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় নেয়া হচ্ছে বীরপ্রতীক তারামন বিবিকে
মুক্তিযুদ্ধে বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবির শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি না হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।
শনিবার যেকোনও সময় তাকে হেলিকপ্টারেযোগে ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন সঙ্গে থাকা তারামন বিবির ছেলে মো. আবু তাহের। শ্বাস কষ্ট ও হৃদপিণ্ডে সমস্যার কারণে শুক্রবার সকালে তাকে রংপুর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে আবু তাহের বলেন, ‘শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি তার হার্টের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমার মা অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। রংপুর সিএমএইচএ আনার পর থেকে তাকে আইসিইউতে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে।’
গুরুতর অসুস্থ এই বীরপ্রতীক উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলেও জানিয়েছেন বীরপ্রতীকের ছেলে মো. আবু তাহের। তিনি বলেন, ‘আমার মা চান তাকে যেন দেশের বাইরে, ভারতের কোনও ভালো হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এটা মায়ের শেষ চাওয়া। আমরাও সরকারের কাছে একই আবেদন জানাচ্ছি।’
জানা গেছে, তারামন বিবির শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। শুক্রবার তাকে রংপুর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তির পর রাতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজের কার্ডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হরিপদ সরকার তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান বীর প্রতীক তারামন বিবিকে ঢাকায় পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রংপুর সিএমএইচ গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসার জন্য বীর প্রতীক তারামন বিবিকে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। সেনা বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে তাকে পাঠানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, বীরপ্রতীক তারামন বিবির প্রকৃত নাম তারামন বেগম। তার জন্ম কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর উপজেলার কাচারিপাড়ায়। কুড়িগ্রামের শংকর মাধবপুরে ১১ নং সেক্টরে কমান্ডার আবু তাহেরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য তাকে ১৯৭৩ সালে তাকে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার। ১৯৯৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর তার হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয় এই সম্মাননা। সরকার তাকে কুড়িগ্রামে জমিসহ একটি বাড়ি তৈরি করে দিলেও তারামন বিবি নিজের গ্রামের বাড়িতেই বেশিরভাগ সময় কাটান।
মোঃ মনিরুজ্জামান, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি