বিয়ে করে অস্বীকার করে উল্টো প্রতারণার মামলা
দেড় বছর প্রেমের সম্পর্কের পর পালিয়ে বিয়ে অত:পর দু’মাস না যেতেই অস্বীকার করায় মামলা করে বিপাকে পড়েছেন নাসরিন বেগম নামের এক কলেজছাত্রী ও তার পরিবার। বিয়ের সময় ভুয়া নিকাহ রেজিস্ট্রি করে ওই ফাঁক গলিয়ে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন প্রতারক শাফী ইমাম সাঈদী। এরপর তার পিতা মাওলানা আবু তালেব বাদি হয়ে ওই কলেজছাত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে উল্টো প্রতারণার মামলা করেছেন।
এ মামলায় বিজ্ঞ আমলী আদালত (রৌমারী অঞ্চল) আসামীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। ফলে গ্রেফতার আতঙ্কে ওই ছাত্রী লেখাপড়া ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার নটানপাড়া গ্রামে। অভিযোগ থেকে জানা যায়, নটানপাড়া গ্রামের লাজু মিয়ার মেয়ে নাসরিন বেগম তার নানার বাড়ি বড়াইকান্দি গ্রামে যাতায়াত করার একপর্যায়ে একই গ্রামের মাওলানা আবু তালেবের ছেলে শাফী ইমাম সাঈদীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দেড় বছর প্রেমের সম্পর্কের পর গত ২ জানুয়ারি বাড়ি থেকে পালিয়ে কুড়িগ্রামের নাগশ্বরী উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়ন কাজী নুর ইসলামের অফিসে তারা নিকাহ রেজিস্ট্রি করেন। কিন্তু সাঈদী ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে প্রতারণা করতেই কাজীকে ম্যানেজ করে নিকাহ রেজিস্ট্রি মূল ভরিয়মে না তুলে একটি লুজ কাগজে নিকাহ রেজিস্ট্রি করেন। যা পরে আদালতে গৃহীত হয়নি।
এদিকে বিয়ের পর সাঈদীর পিতা তাদের বিয়ে মেনে না নিলে নাসরিনদের বাড়িতেই সংসার শুরু করেন নবদম্পতি। বিয়ের দু’মাস যেতে না যেতেই বিয়ে অস্বীকার করে বসেন সাঈদী। ফলে ৩০ মার্চ কুড়িগ্রাম আমলি আদালতে যৌতুক ও খোরপোষ মামলা দায়ের করেন নাসরিন। গত ২৪ মে মামলার শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। জামিনে এসে নাসরিনসহ তার পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেন সাঈদীর পিতা আবু তালেব। আগামী ১৩ আগস্ট আদালত আসামীদের সশরিরে হাজিরের নির্দেশ দেন। অন্যদিকে, রৌমারী উপজেলা চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী, রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু ও শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিল সাঈদী ও নাসরিনের বিয়ের সপক্ষে প্রত্যয়ন দিয়েছেন। তারা বলেন, ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে হয়েছে এবং ঘরসংসারও হয়েছে। ফলে বিয়ে অস্বীকার করার প্রশ্নই ওঠে না।
প্রতারণা মামলার বাদি মাওলানা আবু তালেবের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, মেয়ের মামা মিজানুর রহমানের সাথে আমার সামাজিক দ্বন্দ্বের কারণে বিয়ের নাটক ও আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। যা আদালতে প্রমানিত হয়নি। তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা করেছি।
মোঃ মনিরুজ্জামান, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি