ফিলিস্তিনে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানাল ইরান

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল-আকসা মসজিদ ঘেরাও করে রাখাসহ সেখানে ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর নৃশংস দমন পীড়নের ইসরাইলি পদক্ষেপগুলোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি আজ রোববার এই নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, দখলদার ইসরাইল এ অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদের উৎস। তিনি বলেন, আল আকসা মসজিদ ও এই মসজিদের শহর বায়তুল মুকাদ্দাস ফিলিস্তিনি জাতি ও মুসলমানদেরই চিরস্থায়ী সম্পদ।

কাসেমি মজলুম ফিলিস্তিনিদের সমর্থন দিতে এবং দখলদার ইহুদিবাদীদের আগ্রাসন ও অমানবিক তৎপরতাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিশ্বের সব সরকার ও জাতির প্রতি আহ্বান জানান। বাহরাম কাসেমি বলেন, দখলদার ইহুদিবাদীরা গণহারে ফিলিস্তিনিদের অপহরণ করছে এবং নানা ধরনের অপরাধ ও আগ্রাসন চালাচ্ছে। দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের মৌলিক মানবাধিকার, বিশেষ করে তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় ও পবিত্র স্থানগুলোয় প্রবেশে বাধা দিচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেছেন, ইসরাইলের নৃশংস দমন-পীড়ন থেকে স্পষ্ট যে মজলুম ফিলিস্তিন এখনও মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা এবং এ অঞ্চলের আতঙ্ক ইহুদিবাদী সরকার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রতীক, প্রকাশ ও উৎস। এ অঞ্চলের সরকারগুলো ইহুদিবাদী ইসরাইলের নৃশংস দমন-পীড়নের বিষয়ে নীরব ও নিষ্ক্রিয় থাকায় কাসেমি তাদের সমালোচনা করেছেন। তিনি অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইসরাইলের নির্যাতন, জাতিগত ও ধর্মীয় বৈষম্যের মতো নানা অন্যায় নীতি এবং পদক্ষেপের মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিশেষ করে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বর্ণবাদী ইসরাইলের অমানবিক এবং সংস্কৃতি ও সভ্যতা-বিরোধী পদক্ষেপগুলোর কঠোর নিন্দা জানানোর পাশাপাশি এসব মোকাবেলায় নানা ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাসহ এর অন্যান্য সংস্থার প্রতি আহ্বান জানান। সম্প্রতি মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল-আকসা মসজিদের পাশে গুলি-বর্ষণ ও হতাহতের একটি ঘটনার প্রেক্ষাপটে ইসরাইল প্রথমে এই পবিত্র মসজিদে মুসলমানদের প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। পরে দখলদার কর্তৃপক্ষ এই পবিত্র মসজিদের প্রবেশ-পথ বয়স্ক ফিলিস্তিনি মুসলমানদের জন্য খুলে দিলেও সেখানে ধাতব পদার্থ বা অস্ত্র সনাক্তকরণ যন্ত্রপাতি বসানোসহ নানা ধরনের নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা ও সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। ফলে প্রতিবাদে ক্রমেই বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে ফিলিস্তিনি ও মুসলিম বিশ্বের জনগণ।

ফিলিস্তিনিদের জমি দখলসহ ইহুদিবাদী ইসরাইলের নানা আগ্রাসী তৎপরতা ও বিশেষ করে আল-আকসা মসজিদের ইহুদিকরণের প্রচেষ্টার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামী তৎপরতা ক্রমেই জোরদার হতে থাকায় ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। অবৈধ রাষ্ট্র ইহুদিবাদী ইসরাইল বায়তুল মুকাদ্দাস শহরকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাজধানী করার চক্রান্ত জোরদারের জন্য এ অঞ্চলে মুসলমানদের পবিত্র স্থাপনাগুলো দখল ও সেসবের ইহুদিকরণের চেষ্টা চালাচ্ছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি সংগ্রামীরা এই পবিত্র শহরকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দেখতে চায়।