কপিল দেব নামের সাথে কাল থেকেই উচ্চারিত হচ্ছে হারমানপ্রীত করের নাম। এই ব্যাটারের ১৭১ রানের রোলারে অস্ট্রেলিয়াকে পিষ্ট করে বিশ্বকাপের ফাইনালে চলে গেছে ভারত।

বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্রথম দশ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে দলের রান ৩৫। এমন অবস্থায় নেমে একজন কি বা করতে পারেন। কাল থেকে এ প্রশ্নের উত্তর হবে, হারমানপ্রীত যা করেছিলেন। যে ইনিংসের পর হারমানপ্রীতের মায়ের দাবি, মেয়েদের খুন না করে বাঁচতে দিন, স্বপ্ন দেখতে দিন।

১৯৮৩-এর বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৭৫ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেছিলেন ভারত অধিনায়ক। পরিস্থিতি বিবেচনা করলে হারমানপ্রীতের ইনিংসটি যেন আরও বিস্ময় জাগানিয়া। অস্ট্রেলিয়ার মতো বোলিং লাইন আপের বিপক্ষে ৪২ ওভারে নেমে আসা এক ম্যাচে এমন ইনিংস। দলের দশ ওভার প্রায় শেষ হওয়ার পর নেমেছেন, মাঠ ছেড়েছেন ১৭১ রান নিয়ে। ২০ চার ও ৭ ছক্কার ইনিংসে খেলেছেন মাত্র ১১৫ বল। অথচ ইনিংসের প্রথম ৬০ বলেও টের পাওয়া যায়নি কী ঝড়টা ধেয়ে আসছে অস্ট্রেলিয়ার দিকে। ৬০ বলে ৪১ রান করা হারমানপ্রীত পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ৬৪ বলে। পরের পঞ্চাশ ছুঁতে লেগেছে এর অর্ধেকেরও কম বল, ২৬। আর একশ থেকে দেড়শ রানের সময় তো ছুটেছেন রীতি মতো উল্কা গতিতে। ১৭ বলে পাওয়া ওই ফিফটিতে মাত্র ৪২ ওভারে ২৮১ রান তোলে ভারত। পরে ৩৬ রানের জয়ে এক যুগ পর বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে ভারত।

এমন ইনিংস যিনি খেলেছেন তাঁকে নিয়ে পরিবার গর্ব করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে এ গৌরব যেন দেশের সব মা বাবারই করার সৌভাগ্য হয় সেটাই চাওয়া হারমানপ্রীতের মায়ের। ভারতের বেশ অনেক দিন ধরে চলতে থাকা কন্যা ভ্রূণ অপসারণের যে কুপ্রথা চালু হয়েছে, সেটা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ‘আমি অন্য সব মায়েদের বলছি, আমার মেয়ে আমাদের গর্বিত করেছে। ঠিক সেই ভাবে তাদেরও উচিত তাদের মেয়েদের স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দেওয়ার। জন্মের আগেই তাদের খুন কোরো না।’ এ জন্য বাবাদের ভাবনা চিন্তাও বদল করার অনুরোধ জানিয়েছেন হারমানপ্রীতের মা। তাঁর কন্যা যে আজ ক্রিকেটার হয়ে দেশকে আনন্দে ভাসাচ্ছে, এর পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে তো তাঁর বাবা। বাবার উৎসাহেই রবিবার বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার সুযোগ হচ্ছে হারমানপ্রীতের।